রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় কারিগরি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। কমিটি গঠনের ৪৫ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এই দুর্ঘটনায় আহতদের দেশ-বিদেশে সরকারি ব্যয়ে যথাযথ ও পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে আদেশে। এ-সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল রুলসহ কয়েকটি নির্দেশ দেন। আদেশে রক্তের গ্রুপ ও অভিভাবকের ফোন নম্বরসহ সব শিক্ষার্থীর জন্য পরিচয়পত্র নিশ্চিতে দ্রুত উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে কোনো ধরনের ব্যর্থতা ছাড়াই প্রতি মাসে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, আইনজীবী কায়সার কামাল, গাজী কামরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া শুনানিতে অংশ নেন। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও তানিম খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির শুনানিতে ছিলেন। আদেশের পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাত দিনের মধ্যে কারিগরি অভিজ্ঞতাসম্পন্নদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে পরবর্তী ৪৫ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটির কাজ হবে ওই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি ত্রুটিপূর্ণ বিমান চিহ্নিত করা, যাতে করে তদন্তের পর প্রশিক্ষণ বিমানসহ ত্রুটিপূর্ণ বিমান উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করা যায়।’
রিট আবেদনকারী আইনজীবী মো. আনিসুর রহমান রায়হান বলেন, ‘সাত দিনের মধ্যে কমিটি গঠন করে পরবর্তী ৪৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটির তদন্তের পর রাজধানী ঢাকাসহ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ত্রুটিপূর্ণ বিমান ও প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন কেন নিষিদ্ধ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। মাইলস্টোনের ঘটনায় নিহত প্রত্যেককে ৫ কোটি টাকা করে এবং আহত প্রত্যেককে ১ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আনিসুর রহমান রায়হান গতকাল রিটটি করেন। রিটে প্রতিরক্ষা সচিব, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব এবং ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালকসহ সাতজনকে বিবাদী করা হয়েছে।