ইসরায়েলের দীর্ঘ অবরোধ এবং চলমান যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট তীব্র অপুষ্টিতে ভুগে ফিলিস্তিনি শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক এবং কবি ওমর হার্ব মারা গেছেন। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার মুখে এই বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীর মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ওমর হার্বের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি মারা যান। গাজায় দুর্ভিক্ষজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ৩৭০-এ পৌঁছেছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই শিশু, নারী এবং বয়স্ক।
৬০ বছর বয়সী এই শিক্ষাবিদ যুদ্ধ এবং অবরোধের কারণে তীব্র শারীরিক ও মানসিক কষ্ট ভোগ করছিলেন। ইসরায়েলি হামলায় হার্ব তার স্ত্রী, একাধিক সন্তান এবং নাতি-নাতনিসহ পরিবারের অন্তত ২৬ সদস্যকে হারিয়েছিলেন। এছাড়াও, তার পরিবারের পাঁচটি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
অক্টোবর ২০২৩-এর আগে হার্বের ওজন ছিল প্রায় ১২০ কেজি। মৃত্যুর আগে তার এক শেষ সাক্ষাৎকারে, তার ওজন ৪০ কেজির বেশি ছিল না। সাক্ষাৎকারে তাকে অত্যন্ত শীর্ণ দেখাচ্ছিল এবং তিনি তার প্রিয়জনদের হারানোর বেদনা প্রকাশ করেছিলেন।
তিনি খাবার, ওষুধ, চিকিৎসা এবং একটি নতুন হুইলচেয়ারের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন কিন্তু এর কিছুই তার কাছে সময়মতো পৌঁছায়নি।
মিশরের বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে ডিগ্রি নেওয়া হার্ব অক্টোবর ২০২৩-এ ইসরায়েলি যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত তার পেশায় সক্রিয় ছিলেন। তিনি গাজার অবরুদ্ধ মানুষদের মানসিক সহায়তা প্রদান করতেন।
গত বছর রমজান মাসে হার্বকে গাজা থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল কিন্তু পরে তাকে ফোন করে বলা হয় যে মিশরগামীদের তালিকায় তার নাম নেই।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, আমি আমার আগের আর এখনকার ছবি দেখলাম, আর ভাবলাম, এটা অসম্ভব যে আমরা একই ব্যক্তি। আমরা জানি না কেন এই পরিস্থিতিতে পড়েছি। মানুষ কষ্ট পাচ্ছে এবং কেউ এই কষ্টের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে না। আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা করছি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ১৯ লাখ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। তাদের মধ্যে অন্তত ৬ লাখ ৪১ হাজার মানুষ চরম ক্ষুধার্ত।
সূত্র: প্রেস টিভি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল