বিশ্ব দুগ্ধ দিবস আজ। বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিনটি পালিত হচ্ছে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ২০০১ সাল থেকে প্রতিবছর ১ জুন দিনটিকে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। এবারের প্রতিপাদ্য “দুগ্ধের অপার শক্তিতে, মেতে উঠি একসাথে”।
দুধ কেবল পুষ্টিকর খাদ্য নয়, এটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানেরও বড় উৎস। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদিত হয়। চাহিদা রয়েছে ১ কোটি ৫৯ লাখ টনের বেশি। উৎপাদিত দুধের ৯০ শতাংশ গরু, ৮ শতাংশ ছাগল এবং ২ শতাংশ মহিষের কাছ থেকে আসে।
বর্তমানে প্রতিদিন মাথাপিছু দুধ গ্রহণের পরিমাণ ২৩৪.৪৫ মিলিলিটার, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২৫০ মিলিলিটার গ্রহণের সুপারিশ করেছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানায়, দেশব্যাপী ডেইরি হাব ও ভিএমসিসি (গ্রামীণ দুধ সংগ্রহ কেন্দ্র) স্থাপনের মাধ্যমে উৎপাদন ও বিপণন কার্যক্রমকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। পাশাপাশি পশুখাদ্য হিসেবে সবুজ ঘাস চাষ, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট বলছে, স্থানীয় গরুদের উচ্চফলনশীল ঘাস খাওয়ালে দুধের উৎপাদন দৈনিক ৪-৫.৫ লিটারে পৌঁছানো সম্ভব।
সরকার বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ডেইরি খাতের উন্নয়নে বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। খামারিদের প্রশিক্ষণ, বাজার সংযোগ, স্কুল মিল্ক কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন-ডি, বি-১২, ফসফরাসসহ নানা উপকারী উপাদান, যা হাড় ও দাঁত মজবুত করে, রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং মানসিক চাপ কমায়।
বর্তমানে দেশে প্রায় ২ কোটি মানুষ দুগ্ধখাতের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত। বিশেষ করে গ্রামীণ নারীরা এ খাতের মাধ্যমে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
বিশ্ব দুগ্ধ দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, দুধ শুধু স্বাস্থ্য নয়, এটি খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ।
বিডি প্রতিদিন/আশিক