আজকের ব্যস্ত জীবনে মানসিক চাপ বা অশান্তি যেন এক সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। কখনও সেটা আসে বাইরের কারণ থেকে, কখনও আবার নিজের কিছু ভুল অভ্যাস থেকেই।
অনেক সময় আমরা নিজের অজান্তেই এমন কিছু কাজ বা চিন্তার মধ্যে ডুবে থাকি, যা ধীরে ধীরে আমাদের জীবনকে বিষিয়ে তোলে। আপনি কি নিজের শান্তির শত্রু হয়ে উঠছেন না তো? চলুন, জেনে নিই কোন কোন অভ্যাসের কারণে আপনার জীবন হয়ে উঠছে ক্লান্তিকর ও বিষণ্ণ।
সবকিছুর মধ্যে সেরা হতে চাওয়া
এই প্রতিযোগিতার যুগে অনেকেই সব ক্ষেত্রে সেরা হওয়ার চেষ্টা করেন। তবে সব বিষয়ে এগিয়ে থাকা সম্ভব নয়, বরং এই চাপে আপনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারেন। মনে রাখবেন, মানুষ মাত্রই সীমাবদ্ধ। বাস্তবতা মেনে নিয়ে নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী এগোনোই বুদ্ধিমানের কাজ।
অতিরিক্ত উচ্চাশা ও দেখনদারিতে মেতে ওঠা
দামী চাকরি, বিত্তবান পরিবারে বিয়ে- এসব লক্ষ্য একরকম ভালো হলেও, শুধু সমাজকে দেখানোর জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া মানে নিজের উপর অকারণ চাপ বাড়ানো। বাস্তবতা ও সন্তুষ্টির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখুন।
অতীত ভুলতে না পারা
প্রাক্তন বা পুরনো ব্যর্থতা যদি এখনও আপনাকে তাড়া করে ফেরে, তবে সেটা মানসিক শান্তি নষ্ট করতে বাধ্য। অতীতকে পেছনে ফেলে সামনে এগোনো শিখুন। ভুলে যাওয়াও এক রকম ক্ষমতা।
সত্যকে না মেনে নেওয়া
কখনও কখনও কঠিন সত্যকেও মেনে নেওয়া উচিত। বাস্তবতা অস্বীকার করলে আপনি অস্বস্তি, হতাশা আর মানসিক দ্বন্দ্বে আটকে যাবেন। মনে রাখবেন, সত্যকে মেনে নেওয়ার মধ্যেই মুক্তি।
অন্যকে দোষ দিয়ে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা
নিজের ভুল স্বীকার না করে সবসময় অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপালে সম্পর্ক খারাপ হয়। এটা শুধু আপনার চারপাশের মানুষদের দূরে সরিয়ে দেবে না, আপনাকেও একাকীত্বে ঠেলে দেবে।
‘কমফর্ট জোন’ ছাড়তে না চাওয়া
নতুন পরিবেশ, পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারলে জীবনের উন্নয়ন থেমে যায়। অজানা বা নতুন কিছুতে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক, তবে সেটাকে জয় করতে শিখলে তবেই আপনি এগোতে পারবেন।
অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা
সবসময় অন্যের উপর ভরসা করলে আপনি নিজের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবেন। আত্মনির্ভরতা গড়ে তুলুন। নিজের কাজ নিজে করার অভ্যাস আপনাকে ভবিষ্যতের অনেক সমস্যা থেকে রক্ষা করবে।
মানসিক শান্তি আসে আত্মজ্ঞান, ইতিবাচক মনোভাব ও কিছু অভ্যাস বদলের মাধ্যমে। নিজেকেই যদি ভালো না রাখেন, তাহলে বাইরে থেকেও শান্তি খুঁজে পাওয়া কঠিন। তাই আজই নিজের কিছু পুরনো অভ্যাসের দিকে তাকিয়ে দেখুন- কোনটা আপনাকে ভাঙছে, আর কোনটা গড়ছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ