ইয়েমেনে বড় পরিসরে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে সেখানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে গত শনিবার এ হামলা শুরু হয়। স্থানীয় সময় গতকাল ভোরেও হামলা অব্যাহত ছিল।
ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। তাঁর হোয়াইট হাউসে ফেরার পর এই প্রথম মধ্যপ্রাচ্যে বড় পরিসরে সামরিক হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
একই দিনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুতিদের প্রধান সমর্থক ইরানকে সতর্ক করে বলেছেন, অবিলম্বে এ গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন বন্ধ করা উচিত। তিনি আরও বলেন, যদি ইরান যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দেয় তাহলে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মূলত যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজা উপত্যকায় কোনো ধরনের খাদ্যদ্রব্য, পানি বা ওষুধ সরবরাহ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তাই হুতিরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি জাহাজগুলোতে পুনরায় আক্রমণ শুরু করার হুমকি দেওয়ার পরই যুক্তরাষ্ট্র এ হামলা চালাল। হুতিদের মুখপাত্র মোহাম্মদ আবদুল-সালাম এক বিবৃতিতে অভিযোগ করে বলেছেন, জনমতকে প্রভাবিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলের হুমকির বিষয়টি অতিরঞ্জিত করছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এ হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেছে হুতিদের রাজনৈতিক ব্যুরো। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, মার্কিন আগ্রাসনের জবাব দেওয়া হবে। হুতিদের সশস্ত্র বাহিনী এ হামলার জবাব দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। -এএফপি
হুতি বিদ্রোহী কারা : হুতি বিদ্রোহীরা ইয়েমেনের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। তারা ইয়েমেনের রাজধানী সানাসহ দেশটির বেশির ভাগ অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। গোষ্ঠীটির আবির্ভাব ঘটে গত শতকের নব্বইয়ের দশকে। তবে তারা প্রথমবারের মতো দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনায় আসে ২০১৪ সালে। সে সময় তারা ইয়েমেনের রাজধানী সানা দখল করে। দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদরাব্বু মনসুর হাদিকে তারা ইয়েমেন ছেড়ে পালাতে বাধ্য করে। ২০১৫ সালের মার্চে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হস্তক্ষেপ করে। এ অভিযানে সৌদিকে সমর্থন দেয় পশ্চিমারা। সামরিক জোট ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে। তবে তারা শেষ পর্যন্ত ইরান-সমর্থিত হুতিদের পরাজিত করতে ব্যর্থ হয়। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ২০২২ সালের এপ্রিলে ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। ইয়েমেন ও সৌদি আরব এখন শান্তি আলোচনায় রয়েছে।