ইসরায়েলের দোহা হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে । মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েল কাতারের রাজধানী দোহায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যার লক্ষ্যবস্তু ছিল হামাসের নেতারা। যদিও এই হামলার সময় তারা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় প্রস্তাবিত গাজা যুদ্ধবিরতির আলোচনায় যুক্ত ছিলেন।
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় গত দুই বছরে ৬৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মাঝে অধিকাংশই নারী ও শিশু। এর মধ্যেই কাতারে হামলা চালিয়ে নতুন করে বিশ্বব্যাপী ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে ইসরায়েল।
ঘটনার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ভারত, যেসব দেশ বিভিন্ন সময়ে ইসরায়েলকে নীরব বা প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছে। তারাও এবার দোহা হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলাইন লেভিট বলেন, “সার্বভৌম দেশ কাতারে একতরফা বোমা হামলা যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইসরায়েলের কোনো লক্ষ্য পূরণ করে না।” যদিও একই বক্তব্যে তিনি হামাস ধ্বংস করাকে ‘যোগ্য লক্ষ্য’ বলেও উল্লেখ করেন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতারকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে বলেছেন, এ ধরনের হামলা আর হবে না। কিন্তু কাতার এ নিয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারছে না, কারণ ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণহীনতার প্রমাণ বারবারই পাওয়া যাচ্ছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘ হাত তার শত্রুদের যেকোনো স্থানে আঘাত করবে। এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে তারা লুকাতে পারবে।”
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরাসরি কাতারকে হুমকি দিয়ে বলেন, “আমি কাতার ও সব দেশকে বলছি যারা সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছে, তাদের হয় বহিষ্কার করুন বা বিচারের মুখোমুখি করুন। না হলে আমরাই করব।”
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৭২ ঘণ্টায় ইসরায়েল ছয়টি দেশে হামলা চালিয়েছে—ফিলিস্তিন, কাতার, লেবানন, সিরিয়া, তিউনিসিয়া ও ইয়েমেন। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল এখন কার্যত আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে যেকোনো দেশকে আক্রমণ করার পথ বেছে নিয়েছে। নেতানিয়াহুর ঘোষণায় স্পষ্ট হয়েছে, এ লড়াই কেবল ফিলিস্তিনেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং পুরো বিশ্বকেই ইসরায়েল তাদের যুদ্ধনীতির অংশ করে তুলছে।
লেখক: বেলেন ফার্নান্দেজ, কলামনিস্ট
সূত্র: আল জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/আশিক