খুলনা শহরে নাগরিক পরিষেবায় গত সাত বছরে ১৮৭৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় তিনটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে ৬৬০ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় সড়ক মেরামত প্রকল্পটি শেষ হয় চলতি বছরের ৩০ জুন। ৮৯৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকায় ড্রেনেজ উন্নয়ন ও ৩৯৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন কাজ শেষ হবে ২০২৬ সালের জুনে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নাগরিক পরিষেবায় খুলনা শহরে হাজার কোটি টাকা ব্যয় হলেও কাক্সিক্ষত সুফল মেলেনি। শুধু তাই নয়, অপরিকল্পিত সড়ক উঁচু করায় কয়েক হাজার বাড়ি ঘর রাস্তার উচ্চতার নিচে চলে গেছে। ফলে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি বাড়ছে। সেই সঙ্গে অসহনীয় যানজট, মশা উৎপাত, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাব, ফুটপাত দখলসহ বিভিন্ন সংকট আরও বেড়েছে।
গতকাল সিটি করপোরেশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেট ঘোষণাকালে এ চিত্র তুলে ধরেন নাগরিক নেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। কেসিসি প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার চলতি অর্থবছরের ৭১৯ কোটি ৫০ লাখ ৩৬ হাজার টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন। কনজারভেন্সি বিভাগ, ড্রেনেজ ও স্বাস্থ্য বিভাগকে গুরুত্ব দেওয়া হয় প্রস্তাবিত বাজেটে। ধাপে ধাপে সংকট নিরসনে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন কেসিসি প্রশাসক।
এ সময় নাগরিক নেতারা বলেন যেনতেনভাবে বাজেট বাস্তবায়ন করলে হবে না। পরিকল্পিত টেকসই ও বাস্তবমুখী বাজেট হতে হবে। সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, উন্নত-পরিচ্ছন্ন শহর গড়ে তুলতে নগরবাসীকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে। শহরের শেষ প্রান্তের নাগরিক সুবিধা নিয়েও ভাবতে হবে।
নাগরিক নেতারা বলেন, পিটিআই মোড়ে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে গেছে। ইজিবাইকের দৌরাত্ম্যে যানজট বেড়েছে। প্রধান সড়কসহ অলিগলিতে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা তো রয়েছে। ট্রাক টার্মিনাল ও কেসিসি কাঁচাবাজার একই স্থানে থাকায় উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছে। রেলের জায়গা বরাদ্দ নিয়ে প্রস্তাবিত জোড়াগেট কাঁচাবাজার চালু হয়নি দীর্ঘদিনেও। দৌলতপুর বাজার নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। অপর্যাপ্ত জনবলে পরিচ্ছন্নতা কাজ ব্যাহত হয়। এ ছাড়া সড়কবাতি, ট্রাফিক সিগনাল না থাকা, জিয়া হল প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীর গতি, ওয়াসার সঙ্গে সমন্বয়হীনতা, খোঁড়াখুঁড়ি নির্মাণ কাজে কালক্ষেপণে ভোগান্তি, মজিদ সরণিতে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে অর্থ অপচয়, জোয়ারের সময় নদীর পানি শহরে মধ্যে ঢুকে পড়াসহ দুই ডজনের বেশি সমস্যা তুলে ধরা হয়।
নাগরিক নেতারা বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় জোড়াতালি দিয়ে চলছে সিটি করপোরেশন। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে নাগরিক সেবায়।