যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, দ্বিতীয় মেয়াদের কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি সাতটি বড় আন্তর্জাতিক সংঘাতের অবসান ঘটিয়েছেন। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধান করা তার জন্য সবচেয়ে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, তিনি সাতটি যুদ্ধ সমাপ্ত করেছেন। এর মধ্যে তিনটি সংঘাত ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছিল। একটি যুদ্ধে ৩১ বছরে প্রায় এক কোটি মানুষ নিহত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তবে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতকেই তিনি সবচেয়ে কঠিন বলেছেন। তার ভাষায়, 'আমি ভেবেছিলাম পুতিন ও ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় এটা সহজ হবে, কিন্তু এটাই সবচেয়ে কঠিন প্রমাণিত হচ্ছে।'
ট্রাম্পের দাবি করা যুদ্ধসমূহ- ভারত-পাকিস্তান : ট্রাম্প বলেন, তার মধ্যস্থতায় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে যায়। তবে ভারত বলে আসছে, পাকিস্তানের সেনা কর্মকর্তার অনুরোধেই যুদ্ধবিরতি হয়েছিল, এতে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি ভূমিকা নেই।
থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া : সীমান্ত সংঘাতে তার ফোন কলের পর দুই দেশ অস্ত্রবিরতিতে রাজি হয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বজায় রাখাই ছিল তাদের প্রধান উদ্দেশ্য, মূল সমস্যার সমাধান হয়নি।
কঙ্গো-রুয়ান্ডা : ট্রাম্প দাবি করেন, ৩০ বছরের দ্বন্দ্ব প্রশমিত করেছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেন, রুয়ান্ডার গণহত্যা-পরবর্তী শরণার্থী সংকট ও বিদ্রোহী কার্যক্রম এখনো কঙ্গোতে চলছে। ফলে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি আসেনি।
কসোভো-সার্বিয়া : ট্রাম্প ২০২০ সালে অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তির কথা উল্লেখ করেন। তবে রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক সমস্যা এখনো অমীমাংসিত।
আর্মেনিয়া-আজারবাইজান : তিনি দাবি করেন, তার প্রচেষ্টায় ৩৫ বছরের দ্বন্দ্বে শান্তির পথ খোলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে লাখো বাস্তুচ্যুত মানুষের ফেরার বিষয়টি এখনো অমীমাংসিত।
ইসরায়েল-ইরান : ট্রাম্পের দাবি, তার হস্তক্ষেপে উত্তেজনা কমেছে। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের হামলা ও যুক্তরাষ্ট্র-ইরান আলোচনার ভাঙন ঘটার পর সংঘাত কমলেও তা প্রকৃত শান্তি নয়।
মিশর-ইথিওপিয়া : নীলনদে বাঁধ নির্মাণ নিয়ে বিরোধ থামাতে তার ভূমিকা ছিল বলে দাবি করেন ট্রাম্প।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: সবচেয়ে জটিল পরিস্থিতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে। ট্রাম্প জানান, শুধু এক সপ্তাহেই এখানে ৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই সৈন্য। তার ভাষায়, 'এটা কঠিন, কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত সফল হব।'
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল