আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষার ভরা মৌসুম। কখনো কখনো ভাদ্র মাসেও নদী ভরা পানি থাকে। সেই পানি সেচ দিয়ে কৃষকরা ফসল ফলান। কিন্তু এবার বর্ষা মৌসুম শেষ হতে না হতেই পানি নেই যমুনা-বাঙালি ও করতোয়ায়। শুকিয়ে গেছে সুখদহ আর নাগর। ভদ্রাবতী নদী পানিশূন্য হয়ে খালে পরিণত হয়েছে। দূষণ-দখলমুক্ত করতোয়া খননের পর দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে। নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করতোয়ার উজান কাঁটাখালিতে নদীর মুখে বাঁধ দেওয়ার কারণে যৌবন নেই নদীটির। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিগগিরই করতোয়া নদীর উজানে খনন করা হবে। এজন্য কয়েকটি প্রকল্প দেওয়া আছে।
জানা গেছে, বর্ষায় নদীগুলো পানিতে থৈ থৈ করার কথা ছিল। কথা ছিল নদীর পানিতে ফসলের জমিতে সেচ দেওয়া আর প্রাণ-প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার। কিন্তু পানি নেই। বর্ষার শুরুতেই শুকিয়ে খাক নদীর বুক। শুধু যে পানি সংকটে এই তিন নদীই ধুঁকছে তা নয়; একই সঙ্গে বগুড়ার বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া ছোট-বড় নদীগুলোতে পানি কমে যাওয়ায় যৌবন হারিয়েছে। সে কারণে নদীর আশপাশের ফসলি জমি পানি সংকটে পড়েছে। ফলে ফসল উৎপাদনে কৃষকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
নদীপাড়ের মানুষ বলছেন, আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে যমুনা-বাঙালি ও করতোয়া নদী থাকত পানিতে টইটম্বুর। অথচ এখন পানিশূন্য। জলবায়ু পরিবর্তনের নির্মম উদাহরণ হতে চলেছে এই নদীগুলো। এক সময় মাছের প্রাচুর্য ছিল এসব নদীতে। যমুনা নদীতে ভরা মৌসুমে দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ বেড়াতে আসতেন। নৌভ্রমণের মাধ্যমে যমুনার নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করতেন তারা। অথচ দিন দিন তাপমাত্রা বেড়ে যেমন পানি শুকিয়ে যাচ্ছে অন্য দিকে ভ্রমণে আগ্রহ হারাচ্ছেন আগত মানুষ।
এদিকে তিস্তা নদী থেকে বাঙ্গালি নদীর জন্ম। বাঙ্গালি নদী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাখালি হয়ে বগুড়ায় প্রবেশ করেছে। বাঙ্গালি নদী বর্তমানে বগুড়ার সোনাতলা, ধুনট ও সারিয়াকান্দি উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী ঘাটে গুড়াসাগর নামের নদীর সঙ্গে মিশে গেছে। ১৮৩ কিলোমিটারের বাঙ্গালি নদীতে ভরা মৌসুমে পানি নেই। উজানে অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ ও বর্ষাকালে নদীর তীর ভাঙনের ফলে তলদেশে পলি জমে বাঙ্গালি নদীর নাব্য কমে যাচ্ছে।