সম্প্রতি ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা হামলা চালিয়ে ইরানের ফরদো পারমাণবিক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংসের দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ইরানের পরমাণু কেন্দ্র নিয়ে নতুন প্রকাশ্যে এল। মার্কিন সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি, ফরদো নয়, মধ্য ইরানের ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনার ভূগর্ভেই রয়েছে দেশটির বিশাল ‘পারমাণবিক শক্তি’।
এটির মাটির নিচেই গড়ে তুলেছে সবচেয়ে গোপন এবং দুর্ভেদ্য পারমাণবিক ঘাঁটি। যেখানে রয়েছে ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের সবচেয়ে বড় মজুত, যা অন্তত একটি পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য যথেষ্ট।
ওয়াশিংটনের সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই ঘাঁটিতে ইরান তার ইউরেনিয়ামের প্রায় ৬০ শতাংশ মজুত করে রেখেছে। একই সঙ্গে তারা স্বীকারও করেছেন, ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলায় শক্তিশালী ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করেনি যুক্তরাষ্ট্র। কারণ এই স্থাপনাটি এতটাই গভীরে যে, এই ধরনের বোমাও সেখানে কার্যকর হতো না।
বৃহস্পতিবার মার্কিন সিনেটরদের এক গোপন ব্রিফিংয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন।
মার্কিন কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, স্থাপনাটির ভেতরের অংশ যেখানে ইরানের প্রায় ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ রয়েছে তা এতটাই গভীরে অবস্থিত যে সেগুলো ধ্বংস করা এই বোমার পক্ষেও সম্ভব হতো না।
যুক্তরাষ্ট্রের বি-টু বোমারু বিমান থেকে ফরদো ও নাতাঞ্জ স্থাপনার ওপর ডজনখানেক ‘বাংকার বাস্টার’ ফেলা হলেও ইস্পাহানে কেবল সাবমেরিন থেকে ছোড়া টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে আঘাত করা হয়েছে।
জেনারেল কেইনের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক জন র্যাডক্লিফও এই ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।
সিআইএ জানিয়েছে, ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত ইসফাহান ও ফরদোতে অবস্থিত। ডেমোক্রেট সিনেটর ক্রিস মারফি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “ইরানের কিছু স্থাপনা এতটাই গভীরে যে, সেখানে মার্কিন সামরিক হামলার কোনও সক্ষমতাই পৌঁছাতে পারে না। তারা তাদের মজুতের বেশির ভাগ অংশ এমন সব জায়গায় সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলা কোনও ক্ষতি করতে পারবে না।”
এদিকে পিট হেগসেথ বলেছেন, মার্কিন হামলা থেকে রক্ষায় ইরান তার উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে, এমন কোনও গোয়েন্দা তথ্য আছে বলে তার জানা নেই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও দাবি করেছেন, হামলার আগে কোনও ইউরেনিয়াম সরানো হয়নি। সূত্র: সিএনএন
বিডি প্রতিদিন/একেএ