ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা নিয়ে তিনি ‘অতিরিক্ত আশাবাদী নন, আবার হতাশও নন’। শনিবার ওমানে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক প্রসঙ্গে এই প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে মন্তব্য করলেন তিনি।
গত ১২ এপ্রিল ওমানের মাসকাটে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ ‘পরোক্ষভাবে’ বৈঠক করেন। আলোচনাকে দুই পক্ষই ‘গঠনমূলক’ বলে উল্লেখ করেছে। ১৯ এপ্রিল মাসকাটে এ বিষয়ে দ্বিতীয় দফার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
সরকারি এক বৈঠকে ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে খামেনি বলেন, আলোচনার প্রাথমিক ধাপগুলো ‘ভালোভাবে’ এগিয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করেন, ‘আমরা অপর পক্ষ নিয়ে সন্দিহান, কিন্তু নিজেদের ক্ষমতা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। আমাদের ভাগ্য এই আলোচনার ওপর নির্ভরশীল নয়।’
তিনি আরও বলেন, সতর্কতার সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের ও তাদের উভয়েরই কিছু স্পষ্ট সীমারেখা আছে। আলোচনা সফলও হতে পারে, আবার ব্যর্থও হতে পারে। তাই আমরা ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগোচ্ছি।
ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সামরিক সক্ষমতা ইরানের একটি ‘রেড লাইন’, যা নিয়ে কোনো ধরনের আলোচনা চলবে না।
ওমানে এই আলোচনার সূত্রপাত হয় মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের খামেনির উদ্দেশে পাঠানো একটি চিঠির মাধ্যমে। সেই চিঠিতে নতুন পারমাণবিক আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানানো হয় এবং সতর্ক করে দেওয়া হয়, ইরান সাড়া না দিলে সামরিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
এর আগে খামেনি ট্রাম্পের এই চেষ্টাকে ‘জনমত বিভ্রান্তির কৌশল’ বলে উড়িয়ে দেন। এমনকি ফেব্রুয়ারিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনাকে ‘অযৌক্তিক, অমার্জিত ও সম্মানহানিকর’ বলেও অভিহিত করেছিলেন।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফিরে ট্রাম্প আবারও তার পূর্বের ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগ কৌশল চালু করেছেন। এই কৌশলের আওতায় ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি (JCPOA) থেকে সরে গিয়ে ইরানের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়েছে। ওই চুক্তির আওতায় তেহরান পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা থেকে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিল।
তবে পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর চেষ্টা করছে। তেহরান বরাবরই এটা অস্বীকার করে আসছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল