ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সাত মাস পূর্ণ হয়েছে। একটি গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এ সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল এক সংকটময় পরিস্থিতিতে। কিন্তু গত সাত মাসে আমরা সংকট থেকে কতটা উত্তরণ করতে পেরেছি? বাংলাদেশে যে ইস্পাতকঠিন দৃঢ় রাজনৈতিক ঐক্য ৫ আগস্টের গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সে ঐক্য আমরা কতটুকু রক্ষা করতে পেরেছি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা, বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধাবোধ কতটুকু আছে? এ প্রশ্নগুলো ক্রমেই সামনে আসছে। দেশে সংকট-অবিশ্বাস বাড়ছে, কমছে সমাধানের পথ। রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গত সাত মাসে দেশে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সংকট ক্রমে বেড়েছে। এ সংকট এখন উদ্বেগজনক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা এবং রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে অবিশ্বাস বেড়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলো একে অন্যকে বিশ্বাস করছে না। তাদের বিরোধ ঐক্যের দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে। আমরা যদি সাত মাসের শাসনামল বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখব যে, আমাদের জুলাই বিপ্লবের মূল আকাঙ্ক্ষা এখন রীতিমতো হতাশায় পরিণত হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। জনগণ চেয়েছিল একটি বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ, একটি সাম্যের বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশে প্রত্যেকটি নাগরিকের মর্যাদা থাকবে। প্রত্যেকটি নাগরিক তার মতো করে নিজের অধিকারের জন্য কথা বলতে পারবে এবং রাষ্ট্রে কেউ বঞ্চিত হবে না, বৈষম্যের শিকার হবে না। আর সবচেয়ে বড় আকাঙ্ক্ষার জায়গা ছিল একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে এ দেশের জনগণ বিকশিত হবে।
২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নির্বাসিত। গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো আস্তে আস্তে হরণ করা হয়েছিল। দীর্ঘ এক দশক ধরে এ দেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। ফলে একটি নতুন প্রজন্ম, যাদের নেতৃত্বে জুলাই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে তারা ভোটের জন্য তৃষ্ণার্ত ছিল। জনগণ ছিল তাদের অধিকার আদায়ের প্রতীক্ষায়। গত সাত মাসে আমরা সেই গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার পথে কতটুকু অগ্রসর হতে পেরেছি, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। নির্বাচন প্রশ্নে অনিশ্চয়তার ছায়া ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে।
এ কথা ঠিক যে, রাষ্ট্রব্যবস্থায় অনেক সংস্কার অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল এবং কী ধরনের সংস্কার প্রয়োজন তা নিয়ে একটি মোটামুটি রাজনৈতিক ঐকমত্য আমরা প্রথম থেকে লক্ষ্য করেছি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণ করার পরই বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ হলো একটি পরিবার। এখানে ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধ থাকবে, মতপার্থক্য থাকবেই কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য হিসেবে কাজ করব।’ প্রধান উপদেষ্টার এই আকাঙ্ক্ষা কতটুকু মাঠে বাস্তবায়িত হয়েছে, সাত মাস পর সেই প্রশ্ন উঠতেই পারে। দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের যে ঐক্যের জায়গা, সেখানে বেশ বড় ধরনের ফাটল ধরেছে। বিশেষ করে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির এক ধরনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ ধারণ করেছে। যার ফলে এগুলোর ছোট ছোট দ্বন্দ্ব এবং সংঘাত প্রকাশ্য রূপ নিতে শুরু করেছে। বিশেষত, সদ্যবিলুপ্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে ছাত্রদলের বিভিন্ন স্থানে বিরোধ এবং উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সর্বশেষ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ঘটনায় দেখা যায়, সেখানে পরস্পর পরস্পরকে দোষারোপ করছে। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনের বিরোধ হচ্ছে। এই বিরোধ যদি ভবিষ্যতে আরও বড় আকার ধারণ করে, তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে একটি বড় ধরনের সমস্যা অপেক্ষা করছে। কারণ, ইতোমধ্যে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে প্রশ্ন তোলা হয়েছে যে, জাতীয় নাগরিক পার্টির অর্থের উৎস কী? ছাত্রশিবিরের অর্থের উৎস কী? বিএনপির মধ্যে একটা ধারণা ক্রমশ তৈরি হচ্ছে- তাদের রাজনীতি থেকে মাইনাস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিএনপি নেতারা এখন খোলামেলা বলছেন যে, বিএনপি যেন ক্ষমতায় না আসতে পারে সেজন্য একটি মহল সচেষ্ট। সেই মহলটি কারা সে সম্পর্কে কিছু না বললেও মানুষ বুঝতে পারে যে, নতুন যে রাজনৈতিক শক্তি তৈরি হয়েছে, তারা আসলে আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে চায়। অনেকের ধারণা, তারা নির্বাচনের জন্য যতক্ষণ পর্যন্ত প্রস্তুত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশে তারা নির্বাচন হতে দেবে না। যেহেতু তারা গণ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে, তারা তরুণদের মধ্যে একটি শক্তিশালী অবস্থানে আছে। এ কারণে তাদের সবাই সমীহ করছে। আবার তাদের পেছনে সরকারের প্রচ্ছন্ন সমর্থনের কথাও শোনা যায়। যদিও তারা এটা অস্বীকার করছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু এনিয়ে জনমনে অবিশ্বাস বাড়ছে। বিএনপিও মনে করছে তাদের ক্ষমতা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে তৎপর কোনো কোনো মহল। এজন্য বিএনপিও পাল্টা প্রস্তুতি নিচ্ছে। কারণ, বিএনপির পক্ষ থেকে আগামী এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে। বিএনপির নেতারা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, রোজার পরে নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না পেলে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন। বিএনপি কী ধরনের কর্মসূচি দেবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। নতুন করে বড় ধরনের আন্দোলনে যাওয়ার মতো অবস্থা কি বিএনপির আছে? বিশেষ করে ১৭ বছরের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে আবেগপ্রবণ হয়ে চটজলদি বিএনপি একটা সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে হয়তো যাবে না। এজন্যই বিএনপি যেমন একদিকে সরকারের কাছে নির্বাচন দাবি করছে অন্যদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমালোচনার ক্ষেত্রেও পরিমিতিবোধের পরিচয় দিচ্ছে। কিন্তু বিএনপির অনেক নেতার ধারণা, কেউ কেউ গায়ে পড়ে তাদের সঙ্গে ঝগড়া করতে চাচ্ছে। এই গায়ে পড়ে ঝগড়ার পরিণাম কী হবে? বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভবিষ্যতে এর প্রভাব কী পড়বে সেটি দেখার বিষয়। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি কী হবে তা নিয়েও একটি বড় ধরনের অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। এটা স্পষ্ট আন্তর্জাতিক মহল থেকে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান বিডিআর হত্যাকাণ্ড দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন যে, অবাধ, সুষ্ঠু এবং ‘ইনক্লুসিভ’ নির্বাচন চলতি বছরের শেষ দিকেই হওয়া সম্ভব। এটি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা তার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার কথা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন বা আরও সহজ করে বললে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থাকবে কি না এনিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের বিতর্ক দৃশ্যমান। নতুন সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টি যে কোনো মূল্যে আওয়ামী লীগকে অস্বিত্বহীন করতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা বিবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা বা কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা কেউ কাউকে দেয়নি। তবে যারা অপরাধ করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের ভেতর যারা এই জুলাই-আগস্টে গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত, যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, যারা বিভিন্ন দুর্নীতি এবং অপরাধের সঙ্গে যুক্ত, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। এই বিচারপ্রক্রিয়া এখন শুরু হয়েছে। বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। অনেকে আইনের আওতায় এসেছেন। অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা বিদেশে গেলেও বিচারপ্রক্রিয়ার কোনো বাধা সৃষ্টি হবে না। কাজেই প্রশ্ন উঠেছে যে, যারা অপরাধী, তাদের বিচার হবে কিন্তু সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার থাকবে কি থাকবে না, এনিয়ে অনেকের বক্তব্য দ্বিধান্বিত। কেউ খোলসা করে কিছু বলছেন না। তবে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। আওয়ামী লীগের ভেতর যেমন বেশ কিছু লুটেরা দুর্বৃত্ত গণহত্যাকারী অপরাধী আছে তেমনি আছে নিরীহ সাধারণ কর্মী। যাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত আসেনি। তারা স্বাভাবিকভাবেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। প্রশ্ন উঠেছে, সেই সব ব্যক্তি কি নির্বাচন করতে পারবেন? নাকি তারা দলগতভাবে নির্বাচন করতে পারবেন না? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন যেটি উঠেছে, সেটি হলো আওয়ামী লীগকে ছাড়া যদি শেষ পর্যন্ত একটা নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচনে আন্তর্জাতিকভাবে কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে? কারণ ইতোমধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যসহ বেশ কিছু দেশ অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলো কেউই ছেড়ে কথা বলছেন না। বরং ছাত্রদের একটি নেতিবাচক অবস্থানের কারণে এ ব্যাপারে কথা বলাটাও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বিপদকে আলিঙ্গন করার মতো মনে করছেন। যদিও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ব্যাপারে একটি নীতিনির্ধারণী বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার এক্তিয়ার একমাত্র জনগণের। এ ব্যাপারে জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’ তবে আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে অভিহিত করে কে আওয়ামী লীগকে কীভাবে পুনর্বাসন করেছে তা নিয়ে বিভিন্ন রকম পাল্টা অভিযোগ করেছেন। সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অভিযোগ করছে যে, দ্রুত নির্বাচন করে বিএনপি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়। আবার ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, জাতীয় নাগরিক পার্টির যে ছাত্রসংগঠন সেখানে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগকে পুনর্বাসিত করা হচ্ছে। কে কাকে পুনর্বাসন করেছে তা গবেষণার বিষয়। কিন্তু এনিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে অবিশ্বাস দেখা দিচ্ছে। বিএনপি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির বিরোধ আওয়ামী লীগের ফিরে আসার পথ তৈরি করবে বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
নির্বাচন নিয়ে যত অনিশ্চয়তা তৈরি হবে, নির্বাচন যত দীর্ঘমেয়াদি হবে তত রাজনৈতিক সংকট ঘণীভূত হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস বাড়বে। ইতোমধ্যে যা বাড়তে শুরু করেছে। এই রাজনৈতিক অবিশ্বাস যদি শেষ পর্যন্ত সংঘাতের দিকে যায় তাহলে আওয়ামী লীগের জন্য সুযোগ সৃষ্টি হবে। সেই অপেক্ষাতেই আওয়ামী লীগ আছে বলে কারও কারও ধারণা। যে কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের বিকল্প নেই, এজন্য তাদের দ্রুত একটি সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। আসলে নির্বাচন কবে হবে, এ প্রশ্নের একটি দ্রুত সুস্পষ্ট সমাধান হওয়া উচিত। সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে একটা সুস্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া উচিত। কারণ নির্বাচন নিয়ে যতই অনিশ্চয়তা তৈরি হবে, নির্বাচনের তারিখ যতক্ষণ পর্যন্ত ঘোষণা না হবে ততদিন পর্যন্ত রাজনীতিতে অবিশ্বাস এবং সংকট বাড়তে থাকবে। অবিশ্বাস এবং সংকট যত বাড়বে ততই রাজনীতিতে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি হতেই থাকবে। অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন যে, ’২৪-এর গণ অভ্যুত্থান কি শুধু একটি নতুন নির্বাচনের জন্য ছিল। এই প্রশ্নটি ইতোমধ্যেই ব্যাপকভাবে আলোচিত এবং চর্চিত। এটা ঠিক, নির্বাচন জুলাই বিপ্লবের প্রধান লক্ষ্য ছিল না। গত সাত মাসে প্রমাণিত হয়েছে গণ অভ্যুত্থানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য এই অনির্বাচিত সরকার মোটেও সক্ষম নয়। এখন যে অন্তর্বর্তী সরকার আছে সবাই তাকে চেপে ধরতে চাইছে। বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায় করতে চাইছে। তারা মনে করছে যে, সরকার যেহেতু জনগণের নির্বাচিত হয়, স্বল্প সময়ের মধ্যে যা কিছু পারি আদায় করে নিই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না। বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। উৎপাদন, শিল্প, কলকারখানা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন বাড়েনি। সবকিছু মিলিয়ে চতুর্মুখী সমস্যার মধ্যে নিমজ্জিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সাত মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে পায়নি। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে অন্তর্বর্তী সরকার বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এ কারণেই একটি নির্বাচন হওয়াটা জরুরি। এ নির্বাচন কখন, কীভাবে হবে তা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করতে হবে। কারণ একটি সুনির্দিষ্ট মেয়াদের সরকার ছাড়া দেশে অস্থিরতা এবং অরাজকতা কমবে না। গণ অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাও বিলীন হয়ে যাবে।