মে মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সেটা সপ্তাহের যে কোনো দিন হতে পারে। দেশে ফিরতে মানসিকভাবে প্রস্তুত তিনি। চলছে অন্যান্য প্রস্তুতিও। চূড়ান্ত দিন-তারিখ নির্ধারণ করা না হলেও যুক্তরাজ্যের চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই বাংলাদেশে যেতে পারবেন তিনি। এর মধ্যে তারা চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে গত রাতে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইনশা আল্লাহ আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ম্যাডাম দেশে ফিরবেন বলে আশা করছি। যত তাড়াতাড়ি আসা সম্ভব হয়, তত তাড়াতাড়িই তিনি দেশে ফিরবেন। ম্যাডাম এবং আমরা দেশে ফিরতে মানসিকভাবে শতভাগ প্রস্তুত। এখন লন্ডন হাসপাতালের চিকিৎসকরা চূড়ান্ত নির্দেশনা দিলেই আমরা রওনা করব। অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রফেসর জাহিদ বলেন, ম্যাডাম দেশে ফেরার পর হয়তো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও দেশে ফিরে যাবেন।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমানের বাসায় যুক্তরাজ্যের লন্ডন ক্লিনিক হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। লন্ডন হসপিটালের চিকিৎসকরা ‘হোম ভিজিটের’ মাধ্যমে প্রতিদিনই তাঁর চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। চিকিৎসকরা যখন পরিষ্কারভাবে ছাড়পত্র দেবেন তখনই তিনি দেশে ফিরতে পারবেন।
ডা. জাহিদ হোসেন আরও জানান, ম্যাডামের শরীরের অবস্থা আল্লাহর রহমতে এখন অনেকটাই স্ট্যাবল আছে। তাঁর পুত্র তারেক রহমানের বাসায় থেকে লন্ডন হসপিটালের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন তিনি। তারা (চিকিৎসকরা) হোম ভিজিটের মাধ্যমে এই চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা দেশীয় ডাক্তাররাও তাদের (লন্ডনের ডাক্তারদের) সঙ্গে সব সময়ই সমন্বয় করছি। আমরা আশাবাদী যে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থার ইনশা আল্লাহ আরও উন্নতি হবে এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা দেশে ফেরার ব্যাপারে চূড়ান্ত নির্দেশনা দিতে পারবেন। সবকিছু মিলে আমরা আশা করছি- তিনি আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহের যে কোনো দিন বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত এই চিকিৎসক জানান, তাঁর মাধ্যমে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার পর ম্যাডাম খালেদা জিয়া এখন তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একসঙ্গে অনেকটা উৎফুল্ল দিন কাটাচ্ছেন। মানসিকভাবেও তিনি এখন অনেকটাই উচ্ছ্বসিত। বিশেষ করে পুত্র তারেক রহমান, পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান, পুত্রবধূ সৈয়দা শর্মিলা রহমান, নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, নাতনি জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান ম্যাডামকে ঘিরে আছেন সব সময়। তাদেরও ম্যাডামের ওপর একসঙ্গে সময় কাটানোর একটা অধিকার আছে। চিকিৎসা গ্রহণের পাশাপাশি সব মিলিয়েই তিনি এখন তাদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা চূড়ান্ত ছাড়পত্র দিলেই তিনি ইনশা আল্লাহ দেশে ফিরতে পারবেন।
অন্যদিকে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগামী মাসের ‘ফার্স্ট উইকে’ দেশে ফিরতে পারবেন বলে তারা আশা করছেন। এম এ মালেক বলেন, আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করেছিলাম লন্ডনে ঈদ উদ্যাপন করে দেশে যেতে। তিনি আমাদের অনুরোধ রেখেছেন। এখন তিনি দেশে ফেরার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েছেন। কারণ তিনি দেশনেত্রী, তাঁর কাছে দেশ ও দেশের মানুষই সবচেয়ে বড়। সংশ্লিষ্ট ডাক্তাররাও সে হিসেবে প্রস্তুতি নিয়ে ম্যাডামকে সেভাবেই চিকিৎসা দিচ্ছেন। তবে এখানে ফ্লাইটেরও একটি বিষয় আছে। ফ্লাইট যদি নির্ধারিত সময়ে না পাওয়া যায়, তাহলে দুই এক দিন এদিক-সেদিক হতে পারে। তবে ম্যাডাম দেশে যাওয়ার জন্য মানসিকভাবে পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছেন।