টাইপ ২ ডায়াবেটিস এখন বয়সভেদ না করেই বাড়ছে। আগে যেটি মধ্য ও বৃদ্ধ বয়সে দেখা যেত, এখন তরুণদের মধ্যেও বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জিনগত কারণ ছাড়াও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ওজন বাড়ার পেছনেই রয়েছে মূল কারণ।
চিকিৎসকেরা বলছেন, ডায়াবেটিস একদিনে হয় না। এর আগেই শরীরে তৈরি হয় ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, যা দীর্ঘদিন নিঃশব্দে থেকে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। ক্লান্তি, দুর্বলতা, ঘন ঘন প্রস্রাব, ওজন কমে বা বেড়ে যাওয়া, বারবার মূত্রনালির সংক্রমণ—এসবই হতে পারে প্রিডায়াবেটিসের লক্ষণ। কিন্তু এসব উপসর্গ সাধারণ হওয়ায় অনেকেই সময়মতো বুঝতে পারেন না।
টাইপ ১ ও টাইপ ২—দুই ডায়াবেটিসের পার্থক্য
বিশেষজ্ঞদের মতে,
টাইপ ১ ডায়াবেটিস: জিনগত ও অটোইমিউন সমস্যার কারণে হয়। অগ্ন্যাশয়ের কোষ নষ্ট হয়ে ইনসুলিন তৈরি বন্ধ হয়ে যায়।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস: জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস–সম্পর্কিত। শরীরে ইনসুলিন তৈরি হলেও তা ঠিকমতো কাজ করে না। লক্ষণও আসে ধীরে ধীরে।
চিনি খেলে কি ডায়াবেটিস হয়?
অনেকের ধারণা, চিনি খেলেই ডায়াবেটিস হয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, চিনি খাওয়া ডায়াবেটিস ঘটায় না, তবে ডায়াবেটিস হলে চিনি খাওয়া সীমিত করতে হয়। সুস্থ থাকতে চাইলে চিনি কমানো ও সক্রিয় থাকা জরুরি।
ডায়াবেটিস ঠেকাতে চিকিৎসকের পরামর্শ
- নিয়ম করে রোদে হাঁটাহাঁটি, সম্ভব হলে খালি পায়ে।
- যন্ত্র, ওয়াইফাইয়ের বিকিরণ থেকে দূরে থাকা।
- শরীরের ঘড়ি মেনে চলা—সকালে ওঠা, ঠিক সময়ে ঘুম।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, খাদ্যতালিকায় ফাইবার থাকা অপরিহার্য।
- রাতের খাবার দ্রুত সেরে ফেলা।
- শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট কমানো।
- নিয়মিত শরীরচর্চা।
- খাবারের পর অন্তত ১০ মিনিট হাঁটা—রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ওজন নিয়ে ব্যায়াম করলেও রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ ভালো থাকে। সময়মতো পরীক্ষা ও সচেতন জীবনযাপনই ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
বিডি-প্রতিদিন/সুজন