কারাগারকে সংশোধনমূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ জেল’-এর নাম পরিবর্তন করে ‘কারেকশন সার্ভিসেস বাংলাদেশ’ করার উদ্যোগ নিয়েছে কারা প্রশাসন। একই সঙ্গে যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন, জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন ও বন্দিদের সেবার মান বাড়াতে নানান পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গত
বছর ৫ আগস্টের পর পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে এখনো ৯ জঙ্গি এবং ৭০০ বন্দির হদিস মেলেনি বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন। গতকাল দুপুরে পুরান ঢাকার কারা সদর দপ্তরে ‘কারেকশন সার্ভিস অ্যাক্ট ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি। কারা মহাপরিদর্শক বলেন, ‘আমরা চাই কারাগার হোক একটি কারেকশনাল সার্ভিস। এখানে যারা আসবে তারা শুধুই বন্দি হয়ে ফিরে যাবে না, বরং সংশোধিত মানুষ হিসেবে সমাজে ফিরতে পারবে। এজন্য কারেকশন সার্ভিস অ্যাক্ট ২০২৫-এর খসড়া তৈরি হয়েছে। এর মাধ্যমে কারা ব্যবস্থাপনায় আধুনিকতা আনা হবে, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’ বছরের পর বছর ধরে কারাগারগুলো জনবল সংকটে রয়েছে জানিয়ে আইজি প্রিজন্স বলেন, সম্প্রতি সরকার ১ হাজার ৮৯৯ জন নতুন জনবল নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। এ ছাড়া আরও দেড় হাজার জনবল নিয়োগের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। নতুন নিয়োগ এলে কারাগারের ভিতরের নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক কাজ আরও সহজ হবে। আইজি প্রিজন্স বলেন, দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি সংখ্যা ধারণক্ষমতার তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। এ সমস্যা নিরসনে ইতোমধ্যে নতুন দুটি কেন্দ্রীয় ও চারটি জেলা কারাগার চালু হয়েছে। ঢাকায় অতিরিক্ত চাপ কমাতে রাজধানীর ভিতরে কারাগার বিভাগকে ভাগ করে দুটি আলাদা প্রশাসনিক ইউনিট করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে কারা মহাপরিদর্শক জানান, বন্দিদের খাবারের বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং খাবারের মান উন্নয়নে কঠোর মনিটরিং চালু রয়েছে। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতে ফোনকল ও সাক্ষাতের ব্যবস্থা ডিজিটালাইজ করা হয়েছে।
এখনো অধরা ৯ জঙ্গি ও ৭০০ বন্দি পলাতক : আইজি প্রিজন্স বলেন, ৫ আগস্টের সময় দেশের বিভিন্ন জেলখানা থেকে ২ হাজার ২০০ বন্দি পালিয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু ধরা পড়লেও এখনো ৯ জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দি ধরা পড়েনি। লুট হওয়া অস্ত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লুট হওয়া ২৮টি অস্ত্র উদ্ধারে কাজ করা হচ্ছে। অস্ত্র উদ্ধারে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।