গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ও সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলো সমুন্নত রাখতে জাতির প্রতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনে গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি আয়োজিত “বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সংস্কার” শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। এসময় তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন বিষয়ে মতভেদ থাকতেই পারে, তবে সংবিধানের মূল নীতিমালার প্রশ্নে আমাদের আপসহীন ও ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরি।”
তিনি বলেন, “যখনই কেউ সংবিধানের মূলচেতনা থেকে বিচ্যুত হয়, তখন আমাদের সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করা ও সংশোধনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। এর মাধ্যমেই আমরা সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা রক্ষা করতে পারি এবং জনগণের ন্যায্য অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারি।”
ড. কামাল হোসেন উল্লেখ করেন, অনেক আইনজীবী সংবিধানের নানা বিধান নিয়ে বিভক্ত অবস্থানে রয়েছেন যা এর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন ব্যাহত করছে। তিনি বলেন, “এই বিভাজনই আমাদের শাসনব্যবস্থার সাংস্কৃতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংকটের অন্যতম কারণ।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা সংবিধানের মৌলিক নীতিমালাকে উপেক্ষা করে রাষ্ট্র পরিচালনার চেষ্টা করছি, যা একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।”
সংবিধানের কোন কোন ধারা উপেক্ষিত বা লঙ্ঘিত হচ্ছে তা চিহ্নিত করতে ড. কামাল হোসেন সকলের প্রতি আহ্বান জানান। একই সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্তদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, “যারা সংবিধানের রক্ষক হিসেবে শপথ নিয়েছেন, তাদের যদি সেই শপথ লঙ্ঘিত হয় বা তারা দায়িত্ব থেকে বিচ্যুত হন, তাহলে তা সংবিধানকেই ক্ষুণ্ণ করে, সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়ে এবং রাষ্ট্র থেকে সুশাসন বিলুপ্ত হয়।”
তিনি আরও বলেন, “আজ আমরা যার প্রত্যক্ষ প্রমাণ দেখতে পাচ্ছি- তা হলো দুর্নীতির বিস্তার, ধ্বংসাত্মক শক্তির উত্থান এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থার বিপর্যয়। এসবই আমাদেরকে একের পর এক সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ