ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তাবিত ৮৩টি সংসদীয় এলাকার সীমানা নিয়ে ১ হাজার ৭৬০টি দাবি-আপত্তি আবেদন জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। সবচেয়ে বেশি ৬৮৩টি আবেদন পড়েছে কুমিল্লা অঞ্চল থেকে। সবচেয়ে কম দুটি আবেদন পড়েছে সিলেট অঞ্চল থেকে।
একক আসন হিসেবে সবচেয়ে বেশি ৩৬২টি আবেদন পড়েছে কুমিল্লা-১ আসনে। আর ঢাকার মধ্যে ঢাকা-১ আসনে আবেদন পড়েছে ৭৯টি। শিগগির আবেদন শুনানির সময় নির্ধারণ এবং তা নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানান, ১০ আগস্টের মধ্যে পাওয়া দাবি আপত্তি আবেদনগুলো একীভূত করে ইসি সচিবালয় আমাদের কাছে উপস্থাপন করবে। কমিশন সভায় শুনানি কবে ও কোথায় করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শুনানি শেষে তিন শ আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। দাবি-আপত্তির আবেদন বিষয়ে শিগগির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, সব ধরনের নির্বাচনি প্রস্তুতি অক্টোবরের মধ্যে শেষ করা হবে বলে তিনি জানান। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ২৬১টি আসনের সীমানা বহাল রেখে এবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য মাত্র ৩৯টি আসনে পরিবর্তন প্রস্তাব করে ইসি। এরপরও ৮৩টি আসনের বিষয়ে অনেকের দাবি ও আপত্তি করেছে। এর মধ্যে যেমন বিদ্যমান আসনের সীমানায় আপত্তি জানিয়ে পরিবর্তন চেয়েছে, তেমনি আগের সীমানা বহাল রাখার দাবিও জানিয়েছে। সবচেয়ে বেশি কুমিল্লা অঞ্চলে, কম সিলেটে : গতকাল ইসি সচিবালয়ের উপসচিব মাহবুব আলম শাহ্ জানান, এবার জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার প্রাথমিক সীমানা পুনর্নির্ধারণ-২০২৫ এর ওপর দাবি/আপত্তি সংক্রান্ত ৮৩টি আসনে ১ হাজার ৭৬০টি আবেদন এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে কুমিল্লা অঞ্চল থেকে ৬৮৩টি। সবচেয়ে কম আবেদন পড়েছে সিলেট অঞ্চলের মোট ২টি। সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে একক আসন হিসেবে কুমিল্লা-১ আসনে ৩৬২টি। আর ঢাকার মধ্যে ঢাকা-১ আসনে আবেদন পড়েছে ৭৯টি।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পঞ্চগড়-১, পঞ্চগড়-২, রংপুর-১, কুড়িগ্রাম-৪ আসন নিয়ে রংপুর অঞ্চলের মোট ৭টি আবেদন পড়েছে। সিরাজগঞ্জ-২, সিরাজগঞ্জ-৫, সিরাজগঞ্জ-৬, পাবনা-১ আসন নিয়ে রাজশাহী অঞ্চলের মোট ২৩২টি আবেদন এসেছে। যশোর-৩, যশোর-৬, বাগেরহাট-১, বাগেরহাট-২, বাগেরহাট-৩, সাতক্ষীরা-৩, সাতক্ষীরা-৪ আসন নিয়ে খুলনা অঞ্চলের মোট ৯৮টি আবেদন পড়েছে। বরগুনা-১, বরগুনা-২, ঝালকাঠি-১, পিরোজপুর-১, পিরোজপুর-২, পিরোজপুর-৩ আসন নিয়ে বরিশাল অঞ্চলের মোট ৩৮১টি আবেদন আছে। টাঙ্গাইল-৬, জামালপুর-২, কিশোরগঞ্জ-১ আসন নিয়ে ময়মনসিংহ অঞ্চলের মোট ৩টি। মানিকগঞ্জ-১, মানিকগঞ্জ-২, মানিকগঞ্জ-৩, মুন্সিগঞ্জ-১, মুন্সিগঞ্জ-২, মুন্সিগঞ্জ-৩, ঢাকা-১, ঢাকা-২, ঢাকা-৩, ঢাকা-৪, ঢাকা-৫, ঢাকা-৬, ঢাকা-৭, ঢাকা-১০, ঢাকা-১৪, ঢাকা-১৫, ঢাকা-১৬, ঢাকা-১৮, ঢাকা-১৯, গাজীপুর-২, গাজীপুর-৬, নরসিংদী-৩, নরসিংদী-৪, নরসিংদী-৫, নারায়ণগঞ্জ-৩, নারায়ণগঞ্জ-৪, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন নিয়ে ঢাকা অঞ্চলের মোট ৩১৬টি আবেদন পড়েছে। ফরিদপুর-১, ফরিদপুর-৪, মাদারীপুর-২, মাদারীপুর-৩, শরীয়তপুর-২, শরীয়তপুর-৩ নিয়ে ফরিদপুর অঞ্চলের মোট ১৮টি। সিলেট-১ আসন নিয়ে সিলেট অঞ্চলের মোট ২টি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫, কুমিল্লা-১, কুমিল্লা-২, কুমিল্লা-৬, কুমিল্লা-৯, কুমিল্লা-১০, কুমিল্লা-১১, চাঁদপুর-২, চাঁদপুর-৩, ফেনী-৩, নোয়াখালী-১, নোয়াখালী-২, নোয়াখালী-৪, নোয়াখালী-৫, লক্ষ্মীপুর-২, লক্ষ্মীপুর-৩ আসন নিয়ে কুমিল্লা অঞ্চলের মোট ৬৮৩টি আবেদন। চট্টগ্রাম-৩, চট্টগ্রাম-৫, চট্টগ্রাম-৮, চট্টগ্রাম-১০, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান নিয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মোট ২০টি। গত ৩০ জুলাই তিন শ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এতে ভোটার সংখ্যার সমতা আনতে গিয়ে গাজীপুর জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে ৬টি করা হয়। বাগেরহাটের আসন ৪টি থেকে কমিয়ে তিনটির প্রস্তাব করা হয়। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ২৬১টি আসনের সীমানা বহাল রেখে এবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩৯টি আসনে পরিবর্তন আনা হয়। এগুলো হলো- পঞ্চগড় ১ ও ২; রংপুর ৩; সিরাজগঞ্জ ১ ও ২; সাতক্ষীরা ৩ ও ৪; শরিয়তপুর ২ ও ৩; ঢাকা ২, ৩, ৭, ১০, ১৪ ও ১৯; গাজীপুর ১, ২, ৩, ৫ ও ৬; নারায়ণগঞ্জ ৩, ৪ ও ৫; সিলেট ১ ও ৩; ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ ও ৩; কুমিল্লা ১, ২, ১০ ও ১১; নোয়াখালী ১, ২, ৪ ও ৫; চট্টগ্রাম ৭ ও ৮ এবং বাগেরহাট ২ ও ৩ আসন। তিন শ আসনের খসড়ার পর এ নিয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত আপত্তি আহ্বান করা হয়।