ভোট গ্রহণের দুই মাস আগে নির্বাচনের তারিখসহ বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পুলিশ ও প্রশাসনের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের সুযোগ বলে মনে করেন তিনি। সিইসি বলেন, বিগত ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সবাই মিলে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এখন কেন পারব না? আমাদেরকে পারতেই হবে।’
গতকাল বিকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত ফল উৎসব ও সাংবাদিক এক্সেস কার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে সিইসি এ মন্তব্য করেন।
আরএফইডির সভাপতি কাজী জেবেলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বক্তব্য রাখেন।
সিইসি বলেন, তিনি সরকারি চাকরি করেছেন, যখন মানুষ সমালোচনা করে যে রাতে ভোট করেছে এবং জালিয়াতি করেছে, তখন তিনি মনে কষ্ট পান। আমাদের এই যে প্রশাসনের ইমেজ ক্ষুণ্নু হয়েছে, এদের ভাবমূর্তি সিরিয়াসলি এফেক্টেড হয়েছে; পুলিশের ভাবমূর্তি সিরিয়াসলি এফেক্টেড হয়েছে; আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি সিরিয়াসলি এফেক্টেড হয়েছে; এই ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য এটাই হচ্ছে সুযোগ।’
সিইসি বলেন, ‘যারা এই ইলেকশনের সঙ্গে জড়িত থাকবেন, তাদের কাছে করজোড়ে আবেদন জানাব, আপনারা মানুষের শ্রদ্ধা অর্জনের চেষ্টা করুন। যে ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে সেটা থেকে আপনারা উঠে আসুন। আমরা প্রমাণ করতে চাই যে আমরা পারি, সরকারি কর্মচারীরা পারে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পারে, যদি তারা সত্যিকার অর্থে আন্তরিক হয়।’
আগামী নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে সিইসি বলেন, নির্বাচনের তারিখ তিনি নিজেও জানেন না। ভোটের দুই মাস আগে ভোটের তারিখসহ বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হবে। সেজন্য তিনি ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।
সিইসি বলেন, যেদিন ভোটাররা একদম নিশ্চিন্তে, নিজস্ব উদ্যোগে, বিনা বাধায়, নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে বের হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারবে, সেদিনই বলা যাবে যে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ বলেন, বাংলাদেশে সাধারণ থেকে শিক্ষিত উচ্চশিক্ষিত সবারই কিন্তু ভোটের প্রতি একটা অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। কেন অনীহা সৃষ্টি হয়েছে ব্যাখ্যা দেওয়ার আমার প্রয়োজন নেই, দরকার নেই। তিনি বলেন, আমরা যার যার অবস্থান থেকে সুষ্ঠু সুন্দর গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক একটা নির্বাচন করার জন্য যার যার তরফ থেকে যে ভূমিকা তা আমরা সঠিকভাবে পালন করব। নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ বলেন, নির্বাচন শেষেও একটা ফল উৎসব আছে। এইটা যাতে খুব সুন্দর হয়, আমি সেটাই আশা করব। আমাদের দায়-দায়িত্বটা যদি পালন করি তাহলে একটা নির্বাচন খুব সুন্দর হবে এবং জাতি একটা সুন্দর নির্বাচন উপহার পাবে। আমরা সেজন্যই এখানে (ইসিতে) আছি।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আমাদের সবারই উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য উৎসবের নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করা। সেখানে আমরা যত বেশি মিডিয়ার সম্পৃক্ততা পাব ততই আমাদের জন্য ভালো হবে। তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোকে সুন্দর করার জন্য আমাদের এখন যেমন ভূমিকা আছে। সে রকম দায়বদ্ধতাও আছে। আমরা যে যার দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমাদের দায়িত্বটা পালন করি, যেন আমাদের সন্তান, সহকর্মী ভাই-বোনের রক্তের ওপর দাঁড়িয়েছি, তাদের রক্তের ঋণ যথাযথভাবে পরিশোধ করতে পারি।