ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের কামারদিয়া গ্রামের কুমার নদে সেতু না থাকায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার হাজারো মানুষ। বাঁশের সাঁকো ও বর্ষায় নৌকার ওপর নির্ভর করেই ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। ফলে শুধু যাতায়াতই নয়, কৃষিপণ্য পরিবহন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতেও পড়তে হচ্ছে নানা সমস্যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুমার নদটির একপারে ফরিদপুরের কামারদিয়া বাজার এবং অপরপারে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলা। এ এলাকার অধিকাংশ মানুষই মুকসুদপুর বাজারে ব্যবসা পরিচালনা করেন ও বিভিন্ন প্রয়োজনে নিয়মিত যাতায়াত করেন। কিন্তু সেতু না থাকায় বর্ষায় নৌকা আর শুকনা মৌসুমে বাঁশের সাঁকোই ভরসা। ফলে প্রতিদিন হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
নদীর ওপর স্থায়ী সেতু না থাকায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন স্কুলগামী শিক্ষার্থী, রোগী ও কৃষকরা। স্থানীয় কামারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রবিউল, আলম ও রাফি জানান, বর্ষায় নৌকায় নদী পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়, কিন্তু ঝুঁকির কারণে অনেক সময়ই যেতে পারেন না।
অন্যদিকে কৃষকেরা জানান, সেতু না থাকায় উৎপাদিত পেঁয়াজ, পাটসহ নানা কৃষিপণ্য বাজারে নিতে পারছেন না, ফলে ন্যায্য মূল্য থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। রোগী পরিবহনেও দেখা দেয় সমস্যা—ঝুঁকিপূর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে গিয়ে সময়মতো চিকিৎসা মেলেনা অনেক সময়েই।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মাতুব্বর ও করিম মাতুব্বর বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা কষ্ট করছি। সেতুর দাবিতে অনেকবার বলেছি, নেতারাও আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু সেতু আর হয়নি। এখনো সেই বাঁশের সাঁকোই ভরসা।’
বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিন বলেন, ‘কামারদিয়া ও মুকসুদপুর উপজেলার লাখো মানুষের যাতায়াতের জন্য কুমার নদে একটি সেতু অত্যন্ত জরুরি। অথচ কম গুরুত্বের জায়গায় সেতু হয়েছে, এখানে হয়নি। আমি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আবারও কথা বলব।’
এ বিষয়ে সালথা উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাফর মিয়া বলেন, ‘ওই স্থানে সড়কটি আইডিভুক্ত নয়। তারপরও আমি আমার সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে পাঠাবো। তিনি দেখে এলে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ