২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি ও রোডম্যাপ নিয়ে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন। ঈদের ছুটি শেষে ১৫ জুন অফিস খোলার পরে বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ হবে। সেখানেই এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। তবে আগামী সপ্তাহেই এ বৈঠক হতে পারে বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আগামী সপ্তাহে কমিশনের বৈঠক হতে পারে। নির্বাচন কমিশন আগামী ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের চিন্তা মাথায় রেখে প্রস্তুতিমূলক কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। কমিশনে সেই অনুযায়ী সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ; ভোটার তালিকা হালনাগাদ; নতুন দলের নিবন্ধনসহ অন্যান্য কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে।
এর আগেও নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছিলেন, ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের টার্গেট ধরেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ভোটের প্রাথমিক কাজ শেষ করে জুন-জুলাইয়ে ‘কর্মপরিকল্পনা বা অ্যাকশনপ্ল্যান’ ঘোষণা করা হবে।
৬ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিয়েছেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যে কোনো দিন অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণার ভিত্তিতে উপযুক্ত সময়ে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রকাশ করবে বলেও জানান তিনি।
সূত্র জানায়, অক্টোবরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পাশাপাশি এ বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ; জুনের মধ্যে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা; জুলাই-আগস্টের মধ্যে নতুন দলের নিবন্ধন গেজেট প্রকাশ করার পরিকল্পনা নিয়ে ভোটের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একাধিক সম্ভাব্য তারিখ রেখেই এবারে তফসিল দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচনি মালামাল কেনাকাটা থেকে শুরু করে গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত সব কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করা থাকবে রোডম্যাপে। সে অনুযায়ী নির্বাচনি প্রস্তুতি এগিয়ে নেবে ইসি সচিবালয়। সূত্রমতে, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে নানান ধরনের সামগ্রী মুদ্রণ করতে কী পরিমাণ পেপার লাগবে, বাজেট কত হতে পারে এবং কেনাকাটা থেকে মুদ্রণে কত সময় লাগবে তা নিয়ে প্রস্তুতিমূলক বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন সামনে রেখে প্রয়োজনীয় কাগজ কেনাকাটা ও মুদ্রণ কাজ ভোটের আগে চার মাসের মধ্যে করার প্রস্তুতি রাখছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। সবশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় ১ লাখ ৬১ হাজার রিম কাগজ কেনা হয়েছিল। সেবার ৩৩ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছিল। এবার অন্তত ১ লাখ ৭০ হাজার রিম কেনার প্রয়োজন হতে পারে। শুধু কাগজ কেনায় ৩৬ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে। সবশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধে ‘কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ’ অনুষ্ঠান করে তৎকালীন ইসি। এর আগে একাদশ সংসদ নিয়ে ২০১৮ সালে অক্টোবরের মাঝামাঝি কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন সূচি অনুমোদন করে তৎকালীন কমিশন। বর্তমান ইসি গেল বছর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে দায়িত্ব নেয়। মে মাসে ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে বর্তমান কমিশনের। আগামী ১০-১১ মাসের মধ্যে এ কমিশনকে সংসদ নির্বাচন করতে হবে।