ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুইদল গ্রামবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী ওই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা বহু বাড়িঘর ও দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এলাকায় এখনো উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
সোমবার সকালে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের তেলজুড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশের তথ্যমতে, গত ১৬ নভেম্বর পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের রাকিব শেখের ছেলে রাজ এবং হারুন শেখের ছেলে রহমতের মধ্যে নদীতে গোসল নিয়ে মারামারি হয়। পরে ২২ নভেম্বর রাতে বিষয়টি মীমাংসার জন্য সালিশ বৈঠক বসে। তবে সালিশের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হন হারুন শেখ।
এই বিরোধের জেরে সোমবার সকালে সালথার খাড়দিয়া ও পরমেশ্বরদীর একটি অংশের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তেলজুড়ী বাজার ও পরমেশ্বরদী পশ্চিমপাড়ায় অতর্কিত হামলা চালায়। কয়েক শত মানুষ অংশ নেওয়া এই হামলার পাল্টা জবাব দেন প্রতিপক্ষ গ্রামবাসীরাও। দুই ঘণ্টা ধরে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলতে থাকে।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন— আফতাব (৪২), দৈবকনন্দপুর নাদের (২৪), দূর্গাপুর চকপাড়া রেজাউল (৫০), সবজি ব্যবসায়ী বিপ্লব (৩৫), বাজিতপুর ওহিদ (৪০), তেলজুড়ী ইউনুস (৫০), তেলজুড়ী লিপটন শিকদার (৩৫), দূর্গাপুর অনেকের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খারদিয়া ইউনিয়নের মুশফিক বিল্লাহ জিহাদ ও টুলু মিয়া তাদের শতাধিক লোকজন নিয়ে তেলজুড়ী এলাকায় হামলা চালায়। এ সময় ১৮টি বাড়িঘর এবং বাজারের ৫টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
শেখর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ বলেন, ‘মুশফিক বিল্লাহ জিহাদ ও তার মামা ইলিয়াস কাজী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে। বহু বাড়িঘর ও দোকান ভাঙচুর করে মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।’
ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী–বোয়ালমারী সার্কেল) আজম খান বলেন, ‘শিশুদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে পূর্ব শত্রুতাকে কেন্দ্র করে খারদিয়া এলাকার কিছু লোক তেলজুড়ীতে ঢুকে হামলা চালিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
তিনি আরও জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলায় জড়িতদের শনাক্ত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দুইজনকে আটক করা হয়েছে এবং অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/সুজন