কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে শহিদুল ইসলাম (৫৭) নামের এক গাড়ি চালকের মৃত্যুর ঘটনায় পৌরসভার সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাতে ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা বাদী হয়ে সার্ভেয়ার ফিরোজুল ইসলামকে প্রধান করে মামলাটি দায়ের করেন।
এছাড়াও মামলায় দুই থেকে তিন জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। মৃত শহিদুল পৌরসভার শেরকান্দি এলাকার প্রয়াত গঞ্জের আলীর ছেলে।
মামলার এজাহার ও পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার গাড়ি চালক শহিদুল ইসলাম সকালে অফিসে আসেন। এসময় বকেয়া বেতনের দাবিতে তিনি বিভিন্ন কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন। একপর্যায়ে শহিদুল ১১৫ নম্বর কক্ষের সার্ভেয়ার ফিরোজুলের কক্ষটি বন্ধ করতে যান। এ নিয়ে ফিরোজুলের সঙ্গে শহিদুলের তর্কাতর্কির একপর্যায়ে কিলঘুষি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরে পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা ফিরোজুলকে ১১৫ নম্বর এবং শহিদুলকে ১১৬ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন। কিছুক্ষণ পরে ১১৬ নম্বর কক্ষে গিয়ে পৌরসভায় কর্মকর্তারা দেখেন শহিদুল মেঝেতে পড়ে আছেন। এরপর তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে কুমারখালী বড় জামে মসজিদ চত্বরে জানাজা শেষে শহিদুলকে পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহতের মেয়ে মামলার বাদী সুবর্ণা খাতুন বলেন, সম্প্রতি আমার বাবার ওপেন হার্ট সার্জারি অপারেশন করা হয়েছিল। সকালে বেতন চাইতে গেলে পৌরসভার সার্ভেয়ার ফিরোজুল ইসলাম বাবাকে মারধর করে হত্যা করেছেন। আমি থানায় মামলা করেছি। সঠিক বিচার চাই।
এদিকে ঘটনা পর থেকে ফিরোজুল পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পৌরসভার বাজার পরিদর্শক নুর ইসলাম বলেন, ফিরোজ কাজ করছিল কার্যালয়ে। তখন শহিদুল বেতন না পেয়ে দরজা বন্ধ করতে যাচ্ছিল। ওই সময় ফিরোজের সঙ্গে তর্কাতর্কি ও ধস্তাধস্তি হয়। তার ভাষ্য, শহিদুল হার্টের রোগী ছিল। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে যায়। তবে কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি।
কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, গাড়িচালক শহিদুল মৃত্যুর ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/কামাল