মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দিঘীরপাড় এলাকায় পদ্মার শাখা নদীর ওপর সেতু না থাকায় তিন জেলার হাজারো মানুষের দৈনন্দিন জীবন দুর্ভোগে ভরপুর। দীর্ঘদিন ধরে ৫০০ মিটারের একটি সেতুর দাবি জানিয়ে এলেও তা বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি না থাকায় স্থানীয়দের ক্ষোভ বাড়ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দিঘীরপাড় বাজারের পূর্বদিকে বয়ে যাওয়া পদ্মার শাখা নদী টঙ্গীবাড়ী, শরীয়তপুর ও চাঁদপুর সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। মুন্সীগঞ্জে আসা–যাওয়ার জন্য ব্যবসা, চিকিৎসা ও ঢাকা অভিমুখী যাত্রাকারীদের ভরসা মাত্র কয়েকটি ছোট ট্রলার। ফলে প্রতিদিনই পারাপারে সৃষ্টি হয় চরম ভোগান্তি।
সকাল থেকে দুই পাড়ে থাকে মানুষের ভিড়। ট্রলার এলে ঠেলাঠেলি, না এলে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা—এটাই নিয়মিত দৃশ্য। রাত হলে ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। ট্রলার চলাচল কমে যায়, ভাড়া বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর অভাবে দিঘীরপাড় বাজার ও আশপাশের যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কৃষকেরা ফসল পরিবহনে সমস্যায় পড়ছেন, শিক্ষার্থীরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারছেন না, আর রোগী পরিবহনে দেরি হওয়ায় বাড়ছে জীবনঝুঁকি। একটি সেতুর অভাব পুরো অঞ্চলের উন্নয়নকে থেমে যেতে বাধ্য করেছে।
স্থানীয়দের মতে, সেতুটি নির্মাণ হলে তিন জেলার অন্তত ২০টির বেশি গ্রামের বাসিন্দারা সরাসরি উপকৃত হবেন। কৃষিপণ্য পরিবহন সহজ হবে, শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা পৌঁছাবে মানুষের দোরগোড়ায়, আর বাণিজ্যিক কার্যক্রমে আসবে গতি।
শরীয়তপুরের কাঁচিকাটা এলাকার বাসিন্দা মো. ইয়াসিন বেপারী বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা এই নদী। রাতে ট্রলার পাওয়া কঠিন, পেলেও ভাড়া অনেক বেশি। ৫০০ মিটারের একটি সেতু হলে এই কষ্ট আর পোহাতে হতো না।
টঙ্গীবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহ্ মোয়াজ্জেম জানান, দিঘীরপাড় এলাকায় সেতু নির্মাণের উদ্যোগ চলমান। বুয়েট জরিপ ও পরিবেশগত মূল্যায়ন শেষ করেছে। প্রকল্পটি এলজিইডির অনুমোদন পর্যায়ে রয়েছে। অনুমোদন পেলেই নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
দিঘীরপাড়বাসীর আশা, বহু বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে পদ্মার শাখা নদীর ওপর দ্রুত একটি স্থায়ী সেতু নির্মিত হবে এবং তিন জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বদলে যাবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল