বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রশিক্ষিত তিন হাজার কর্মী নেবে জাপান। সরকারের পাশাপাশি টিএমএসএস তরুণদের প্রশিক্ষিত করে জাপানে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করছে।
টিএমএসএস ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড আইসিটি (টিআইএসআই) এবং টাউনলাইফ কোম্পানী জাপানের মধ্যে এক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন টিআইএসআই এর পক্ষে টিএমএসএস এর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপিকা ড. হোসনে আরা বেগম ও টাউনলাইফ কোম্পানী জাপান এর পরিচালক মি. তোমিজাওয়া কাজুনোরি। এই চুক্তির মাধ্যমে ডিপ্লোমা ইন সিভিল কন্সট্রাকশন ও ইলেকট্রিক্যাল ট্রেডে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাপানে তিন হাজারজনের কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণের বাস্তবিক সুযোগ তৈরী হলো।
এটি শুধু প্রাতিষ্ঠানিক অর্জন নয়। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে প্রবেশের দ্বার উন্মোচিত হলো। যেখানে তারা নিজেদের দক্ষতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে পারবে। এই চুক্তি বাংলাদেশের কারিগরি আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে প্রবেশাধিকার ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জানা যায়, বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার সুজাবাদ এলাকায় টিএমএসএস ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড আইসিটি (টিআইএসআই) নামের প্রতিষ্ঠান জাপানীজ ভাষার পাশাপাশি বিভিন্ন ট্রেডে কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানে ট্রেড অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছে। এখানে হাতে-কলমে তাদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে গড়ে তুলেতে এখানে টাউনলাইফ-টিআইএসআই জাপানীজ ভাষা এবং স্কিল ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে। যেখানে প্রতিনিয়ন জাপানীজ ভাষাসহ কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। জাপানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি লক্ষ্যে টিএমএসএস দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় টিএমএসএস ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড আইসিটি (টিআইএসআই) এবং টাউনলাইফ কোম্পানী জাপানের মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন টিআইএসআই এর পক্ষে টিএমএসএস এর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম ও টাউনলাইফ কোম্পানী জাপান এর পরিচালক মি. তোমিজাওয়া কাজুনোরি। অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও প্রবাসী কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্ল্যা ভুঁইয়া। এই চুক্তি বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করবে। জাপানসহ অন্যান্য দেশে কর্মসংস্থানের নতুন দ্বার উন্মোচন হবে। এছাড়াও যৌথ ভাবে প্রকল্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে। চুক্তির মাধ্যমে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রযুক্তি, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান ক্ষেত্রের পারস্পরিক সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় হবে । এই চুক্তির ফলে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ লাভ করবে।
এদিকে ১৪টি খাতে জাপানে চাকরি করার সুযোগ আছে। এগুলো হচ্ছে নার্সিং কেয়ার বা কেয়ার গিভার, রেস্টুরেন্ট, কনস্ট্রাকশন, বিল্ডিং ক্লিনিং, কৃষি, খাবার ও পানীয় শিল্প, সেবা খাত, ম্যাটেরিয়ালস প্রসেসিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্যাকেজিং, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস যন্ত্রপাতি, জাহাজ নির্মাণশিল্প, মৎস্যশিল্প, কার পেইন্টিং, ওয়েল্ডিং ও অটোমোবাইল মেকানিক বা অটোমোটিভ যন্ত্রাংশ তৈরি শিল্প এবং এয়ারপোর্ট গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং অ্যান্ড এয়ারক্রাফট মেনটেন্যান্স (এভিয়েশন)। জাপানের কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমছে। বাড়ছে বাংলাদেশিদের কাজের সুযোগ। এজন্য জাপান বাংলাদেশের শ্রমবাজারের নতুন গন্তব্য হতে পারে। জাপানে লোক পাঠানোর খরচ খুব বেশি না। সেখানে ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে লোক নিয়োগের সুযোগ নেই।
টিএমএসএস এর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপিকা ড. হোসনে আরা বেগম জানান, তরুণদের জাপানে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হচ্ছে। জাপানীজ সংস্থার সাথে আমরা নিরবিচ্ছিন্ন কাজ করে যাচ্ছি। টিএমএসএস ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এন্ড আইসিটি (টিআইএসআই) এবং টাউনলাইফ কোম্পানী জাপানের মধ্যে এক চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এই চুক্তি বাংলাদেশের কারিগরি আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে প্রবেশাধিকার ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রশিক্ষিত তিন হাজার কর্মী নেবে জাপান।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল