দুর্গাপূজা উপলক্ষে পাবনার ফরিদপুর উপজেলার থানাপাড়া খেলার মাঠে এনএস ক্লাবের আয়োজনে লটারি-২০২৫ নামে একটি লটারির আয়োজন করা হয়েছে। প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়াই লটারি পরিচালিত হচ্ছে, যা লটারি আইন ২০১২-এর ধারা ৫ ও ৬ অনুযায়ী স্পষ্টতই অবৈধ।
প্রতি টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে ২০ টাকা। আয়োজকরা মোট ১৫১টি পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন, সেলাই মেশিনসহ নানা আকর্ষণীয় পণ্য। টিকিটে উল্লেখ ছিল ১৬ অক্টোবর ড্র অনুষ্ঠিত হবে, তবে পরবর্তীতে তা পিছিয়ে ২০ অক্টোবর করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নানা রকম পুরস্কারের লোভে পড়ে অনেক সাধারণ মানুষ ধার দেনা করে টিকিট কিনেছেন, যা তাদের অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লটারির ড্র ও পুরস্কার বিতরণে অস্বচ্ছতা ও প্রতারণার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, এ ধরনের অনুমোদনহীন লটারি শুধু মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষতি ডেকে আনে না, বরং এটি জুয়া ও প্রতারণার এক রূপ, যা সমাজে অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও আর্থিক অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে।
ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা বলেন, প্রতি বছরই এরা এমন নামে বেনামে লটারি পরিচালনা করে। স্থানীয় প্রশাসনের সামনে, তবুও কোনো ব্যবস্থা নেন না। মানুষ টাকা-পয়সা খরচ করে, শেষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
স্থানীয়রা প্রশাসনের অবিলম্বে হস্তক্ষেপ ও কঠোর ব্যবস্থা দাবি করেছেন, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুমোদনহীন লটারির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ক্ষতিরোধ করা যায়।
এ বিষয়ে অবৈধ লটারির আয়োজক এনএস ক্লাবের কমিটির কর্মকর্তাদের মূল দায়িত্বশীলদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তারা ফোন করে রিসিভ করেনি। তবে নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন বলেন, ক্লাবের উন্নতির স্বার্থে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হয়, কমিটির সিদ্ধান্তে। আসলে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান তো চলেই দান খয়রাত বা অনুদানের টাকায়। এখন অনেকেই টাকাও দিতে চায় না, তাই বাধ্য হয়েই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুব হাসান বলেন, লটারির বিষয়টি তদন্তের জন্য ফরিদপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে বার্তা পাঠানো হয়েছে।
ফরিদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাকিউল আজম জানান, পূজার আগে আয়োজকরা অনুমতি চেয়েছিল, কিন্তু আমরা অনুমতি দিইনি। যদি তারা অবৈধভাবে লটারি পরিচালনা করে থাকে, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত