রংপুরের পীরগাছায় অসুস্থ গবাদি পশুর সংস্পর্শ থেকে মানুষের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তদের হাতে প্রথমে ফুসকুড়ি, পরে ঘা ও গভীর ক্ষত তৈরি হচ্ছে। গত এক মাসে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ২০০-র বেশি মানুষ চিকিৎসা নিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে।
সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এলাকা হলো পীরগাছা সদর, ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়ন। পাশাপাশি গবাদি পশুর মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে আছেন কৃষক ও খামারিরা।
স্থানীয় বাসিন্দা সাবনিয়া আক্তার জানান, এক সপ্তাহ আগে তাদের ৩টি গরু হঠাৎ মারা যায়। পরে তিনি নিজেও আক্রান্ত হন। আরেক রোগী দুলাল মিয়া বলেন, অসুস্থ ছাগল জবাই করার পর হাতে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন। আবুল কাশেম জানান, একই কারণে দেড় মাস ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তাম্বুলপুর ইউনিয়নের জয়নাল মিয়া জানান, তার চাচার বাড়িতে গরু জবাইয়ের পর যে মাংস যারা ছুঁয়েছেন, তাদের প্রায় সবাই আক্রান্ত হয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আঁখি সরকার জানান, প্রতিদিন গড়ে ৫-৭ জন নতুন রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। একই পরিবারের সব সদস্য আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। তিনি বলেন, "যদিও এখনো ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা হয়নি, উপসর্গগুলো অ্যানথ্রাক্সের সঙ্গেই মিলে।"
রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা নিশ্চিত করে বলেন, "এটি অ্যানথ্রাক্স রোগ। পশু থেকে মানুষের শরীরে এ রোগ ছড়াচ্ছে, তবে এটি ছোঁয়াচে নয়। আতঙ্কের কিছু নেই।"
এদিকে, গত এক মাসে পীরগাছায় শতাধিক গবাদি পশু মারা গেছে। মোজাফফর মিয়া, শাহ আলম, খোকা মিয়া, আমিরুল ইসলাম, মশিয়ার রহমান, খুরশিদ আলমসহ অনেকের গরু ও ছাগল মারা গেছে, যার ক্ষতির পরিমাণ লাখ লাখ টাকা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. একরামুল হক মন্ডল জানান, "গবাদি পশুর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ভ্যাকসিনের সংকট কিছুটা সমস্যা তৈরি করেছে, তবে বুধবার থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে।"
বিডি প্রতিদিন/আশিক