গ্রামীণ ঐতিহ্যকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে মনোমুগ্ধকর ও প্রাণবন্ত লাঠি খেলা। ঢাক-ঢোল ও কাঁসার ঝঙ্কারে মুখর ছিল পুরো এলাকা। হাজারো দর্শকের উপস্থিতিতে উৎসবটি হয়ে ওঠে জমজমাট।
গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের বাড়িউড়া গ্রামের বালুমহাল মাঠে এই ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের লাঠিয়াল বাহিনী অংশ নেয়। বাদ্যের তালে তালে তারা নৃত্যভঙ্গিমায় লাঠির কসরত প্রদর্শন করে। কখনও প্রতিপক্ষের আঘাত ঠেকিয়ে, আবার কখনও পাল্টা আক্রমণে মেতে ওঠে প্রতিযোগীরা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনসুর আহমেদ। প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক আবদুল মালেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী দানা মিয়া, কবীর মেম্বার, গিয়াস উদ্দিন মিয়া, আলফাজ মিয়া, বিল্লাল মিয়া ও শাকিল মিয়া।
লাঠি খেলাকে ঘিরে পুরো এলাকা পরিণত হয় উৎসবমুখর এক আনন্দমেলায়। নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ ভিড় জমায় মাঠে। দর্শকরা করতালির মাধ্যমে লাঠিয়ালদের উৎসাহিত করেন। হারিয়ে যাওয়া এই লোকজ খেলাটি দেখে অনেকেই ফিরে যান শৈশব স্মৃতিতে।
দর্শনার্থীরা জানান, এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে নিয়মিত আয়োজন ও সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।
খেলার উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান অতিথি আবদুল মালেক। তিনি বলেন, ‘লাঠি খেলা শুধু একটি বিনোদন নয়, এটি আমাদের শেকড়ের সঙ্গে সম্পর্কিত এক ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি। যুবসমাজকে মাদক ও অপরাধ থেকে দূরে রাখতে এমন আয়োজনে সকলকে অংশ নিতে হবে। এই ঐতিহ্য রক্ষায় সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসতে হবে।’
অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহণকারী লাঠিয়ালদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন রহিজ মিয়া ও সারোয়ার জাহান।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ