ঠাকুরগাঁও জেলায় সাপের কামড়ে দুই সপ্তাহে অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিভেনম না থাকায় সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন রোগীরা। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্ত এলাকার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের স্কুলছাত্র সাকিবুল ইসলাম (পঞ্চম শ্রেণি) বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায়।
জানা যায়, সাপ কামড়ানোর পর প্রথমে তাকে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কিন্তু কোথাও অ্যান্টিভেনম মজুদ না থাকায় তাকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় সাকিবুল।
শিশুর বাবা ইসরাইল উদ্দীন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “চারটা হাসপাতালে নিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। কোলে করেই ছেলেকে হারালাম। আর যেন কোনো বাবার বুক খালি না হয়, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”
একইভাবে, সাকিবুলের মতো পীরগঞ্জের স্কুলছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী, হরিপুরের গৃহবধূ সম্পা রানীসহ গত দুই সপ্তাহে অন্তত ৬ জন সাপের কামড়ে মারা গেছেন।
সম্পা রানীর স্বামী জিতেন জানান, “হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ওঝার কাছে যেতে হয়েছিল। তবুও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি। দেড় বছরের সন্তান নিয়ে এখন আমি অসহায়।”
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, “চাহিদা পাঠানোর পরও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে অ্যান্টিভেনম পাওয়া যায়নি। সেখানেও সংকট রয়েছে। চেষ্টা করছি দ্রুত আনার।”
সাপের কামড়ে মৃত্যুর এই ধারাবাহিক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে। চিকিৎসক ও সচেতন মহল বলছেন, বর্ষার শুরুতেই প্রতিটি উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম সরবরাহ করতে হবে, যাতে একটি জীবনও অযথা ঝরে না যায়।
বিডি প্রতিদিন/আশিক