নেত্রকোনায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) সেচ বিভাগের একটি পরিত্যক্ত ভবনের ভাঙ্গন কাজের সময় দেয়াল ধ্বসে তিন শ্রমিক নিহতের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। নিহতদের পরিবার ও আহতদেরকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
বিএডিসি (সেচ) নির্মাণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. বদরুল আলমকে আহবায়ক করে শুক্রবার এই কমিটি গঠিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন নেত্রকোনা বিএডিসি (সেচ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জনিয়ার সারোয়ার জাহান। তদন্ত কমিটির সদস্য দুজন হলেন, সেচ বিভাগের কিশোরগঞ্জ প্রকৌশলের তত্বাবধায়ক পঙ্কজ কর্মকার ও কিশোরগঞ্জের (সেচ) নির্বাহী প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বেলা ১২ টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালেয় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিহতদের পরিবারের হাতে তুলে দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রাফিকুজ্জামন। আহত দুজনের জন্য ২৫ হাজপার করে অর্থ সহায়তা দেয়। এছাড়াও ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার রাতেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেকের জন্য ২০ হাজার করে এবং আহতদের প্রত্যেকের জন্য ১০ হাজার করে তাৎক্ষণিক অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তবে ঠিকাদারের গাফিলতিতে এই দুর্ঘটনা ঘটলেও তাকে পাওয়া যায়নি বলে নিহতদের স্বজনদের অভিযোগ রয়েছে।
নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি কাজী শাহনেওয়াজ জানান, লাশের ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার তিনজনের মরদেহই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঠিকাদার দেলোয়ার হোসেন মাসুমের ঠিকানাও পেয়েছি। তবে ঠিকাদারকে ঘটনার পরে আর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বিএডিসি সেচ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সারওয়ার জাহান বলেন, গত মার্চ মাসে সভার করে ৫ লক্ষ টাকায় মেসার্স আল মোবারক হোসেন নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পুরাতন পরিত্যাক্ত ভবনটি ক্রয় করেন। ঠিকাদার দেলোয়ার হোসেন মাসুম ট্যাক্স ভ্যাট বাবদ ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা সরকারী কোষাগারে জমাও দিয়েছিলেন। কিন্তু এটিতে কাজ করার সময় সচেতন হয়ে মেশিনের সাহায্যে ভাঙ্গলে এই দুর্ঘটনা হতো না বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) নেত্রকোনা সেচ ভবনের একটি পরিত্যক্ত ভবনে নয়জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। হঠাৎ ভবনের সানসেটসহ দেয়াল ভেঙ্গে পড়ে তিনজন শ্রমিক ঘটনাস্থলেই চাপা পড়ে মারা যান।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও মডেল থানার পুলিশ গিয়ে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে। আহত দুজনের মধ্যে হাসান মিয়াকে (৩৬) ময়মনসিংহ ও সাইকুল মিয়াকে (৩৪) নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন, সদরের পলাশহাটি গ্রামের দিপু মিয়া (৪০), হলুদআটি গ্রামের মো. হান্নান মিয়া (৪০) ও আটপাড়া উপজেলার অভয়পাশা গ্রামের মো. ছালাম মিয়া (৪০)।
বিডি প্রতিদিন/এএম