চাঁদপুর সদর, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও হাইমচর উপজেলাগুলো পদ্মা-মেঘনা নদীর উপকূলবর্তী এলাকা। এসব উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় ৪০টি চর মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে রয়েছে। এই চরাঞ্চলের মানুষের দৈনন্দিন কেনাকাটা ও চিকিৎসাসেবা গ্রহণে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা-মেঘনা পাড়ি দিয়ে জেলা সদরে আসতে হয়। চরগুলোর সাথে জেলা সদরের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ইঞ্জিনচালিত নৌকা বা ট্রলার।
এ রুটে যাতায়াতকারী আসমা বেগম ও মরন গাজী বলেন, বর্ষায় আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ইঞ্জিনচালিত নৌকায় নিয়মিত যাওয়া-আসা করি। আকাশ যখন মেঘাচ্ছন্ন ও নদীতে উত্তাল ঢেউ ওঠে তখন পদ্মা-মেঘনা পাড়ি দেওয়া অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও উত্তাল নদীতে চরের নারী-পুরুষ বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই নদী পাড়ি দিয়ে থাকে।
এছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বহু মানুষ শহর থেকে ট্রলারে নদী পাড়ি দিয়ে নিয়মিত পশ্চিম পাড়ে যাতায়াত করে।
পুরানবাজার মদিনা ঘাট ইজারাদার শাহ আলম জানান, বর্ষায় নদী পারাপারে নিয়োজিত ট্রলারগুলো যাতে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল পরিবহন না করে সেজন্য আমরা সতর্ক করে থাকি। ঘাটে ট্রলার মাঝিদের বারবার নদী পারাপারে ঝুঁকির বিষয়টি স্মরণ করে দিই এবং লাইফ জ্যাকেট এবং বয়া ট্রলারে রাখার জন্য বলে থাকি।
ট্রলার মাঝি শাহজালাল ও রহিম খাঁ বলেন, ‘যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ট্রলারে লাইফ জ্যাকেট ও বয়া রেখেছি। বর্ষায় নদীর উত্তাল ঢেউ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যদি যাত্রীবাহী ট্রলার দুর্ঘটনার শিকার হয়, তাহলে যাত্রীরা সেই লাইফ জ্যাকেট বা বয়া নিয়ে নিজেদের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হবেন। তদুপরি আমরা দীর্ঘ বছর যাবত এই নদীতে স্রোত ও ঢেউয়ের অবস্থা বুঝে ট্রলার চালিয়ে থাকি। এই নদীতে যে ধরনের ঘূর্ণাবর্ত থাকে, তাতে অন্যস্থানের ট্রলার চালকরা এখানে এসে ট্রলার চালালে দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।’
চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক বাবু লালা বৈদ্য বলেন, এই ট্রলার চলাচলে আমাদের কোনো অনুমোদন নেই। তবে পুরানবাজার থেকে আলুরবাজারসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে ঝুঁকি নিয়ে যাতে ট্রলারগুলো চলাচল করতে না পারে, সেজন্য নৌ-পুলিশকে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে। কালবৈশাখী আসার প্রাক্কালে আমরা এ সংক্রান্ত কিছু পদক্ষেপ নিয়ে থাকি। যাতে করে ট্রলারগুলো ঝড়ের সিগনাল অনুসরণ করে, সেজন্য সার্বক্ষণিক আবহাওয়া অফিসের সংকেত অনুসরণ করতে বলা হয়।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ