কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে আরেক হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিএনপি কর্মী কুদরত আলীকে গুলি করে হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এর আগে, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর বিএনপি কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কুষ্টিয়া কারাগারে আছেন।
সোমবার দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে হাতকড়া পরা ছাড়াই কারাগার থেকে কুষ্টিয়া আদালতে আনা হয় পুলিশের সাবেক এসপি তানভীর আরাফাতকে। তাকে দৌলতপুর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা পারভেজের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে দুপুর ১টা ৫১ মিনিটে আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়।
উপ-পুলিশ কমিশনার তানভীর আরাফাত সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিশপুর উপজেলায়। কুষ্টিয়ায় চাকরিকালে বক্তব্যসহ কার্যক্রমে নানাভাবে বিতর্কিত ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এসএম তানভীর আরাফাত। কুষ্টিয়া জেলায় আসার পর থেকেই নানা কর্মকাণ্ডে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এমনকি এসব কাণ্ডে তাকে আদালতের কাঠগড়ায় পর্যন্ত দাঁড়াতে হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত বিএনপি কর্মী কুদরত আলীর ছেলে ফের্দস বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ২ অক্টোবর দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, ২০২০ সালের ২৩ জুলাই রাত দুইটার দিকে আমাদের নিজ বাড়ি মুন্সিগঞ্জ থেকে কয়েকজন পুলিশ আমার বাবা কুদরত আলীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ২৩ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত আমিসহ আমার আত্মীয়স্বজন ও বিএনপি দলের লোকজন বাবার সন্ধান করেও পাইনি। ২৫ জুলাই ভোর বেলায় শুনতে পাই আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে এবং পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত কুষ্টিয়ায় কিলার তানভীর উপাধি পাওয়ায় তার ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারিনি। ফলে আমি ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোনো মামলা করতে পারিনি। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় মামলাটি করা হয়েছে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলাইমান শেখ বলেন, দৌলতপুর থানার একটি মামলায় তাকে গ্রেফতারের আবেদন করা হয়েছিল আদালতে। আবেদনটি মঞ্জুর করেছেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির কর্মী সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি তানভীর আরাফাতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর নিহত সুজনের রাজনৈতিক বড় ভাই সুজন হোসেন (৪২) বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন। মামলায় মোট ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০-১২ জনকে।
নিহত সুজন মালিথা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের ইসমাইল মালিথার ছেলে। মামলার বাদী সুজন হোসেন কুষ্টিয়া শহরের মিললাইন এলাকার লালন শাহ সড়কের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই