ইছামতি নদীর ভাঙনে হুমকিতে পড়েছে দিনাজপুরের খানসামার নলবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়। নদীর তীর এখন বিদ্যালয় ভবন থেকে ৩ ফুট দূরে। যে কোনো সময় ভবনটি নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। দ্রুত নদীশাসনের মাধ্যমে বিদ্যালয়টি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ইছামতি নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। বিশেষ করে পানি বেড়ে গেলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যায়। বিগত ৬-৭ বছরে এ ভাঙন ক্রমাগত বাড়ছে। বিদ্যালয়টিতে প্রায় সাড়ে চার শ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। স্থানীয় মিম শাহ বলেন, নদীতে বিদ্যালয়ের ভবন ধসে পড়লে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হবে। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে বিদ্যালয় রক্ষা করা জরুরি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, খানসামা উপজেলার নলবাড়ী গ্রামের ক্যাম্পেরহাট এলাকায় ইছামতি নদীর তীরে মনোরম পরিবেশে ১৯৮৮ সালে গড়ে তোলা হয় নলবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের একতলা ভবনে পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ, একটি কমন রুম, টিনশেডের একটি লাইব্রেরি এবং দুটি ব্যবহারিক শ্রেণিকক্ষ অবস্থিত। এর ঠিক পেছনেই ইছামতি নদী। ভাঙতে ভাঙতে নদী ভবনের একেবারেই কাছে চলে এসেছে। এ কারণে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আর্নিকা আকতার বলেন, প্রতিদিন ক্লাস করতে গিয়ে ভয় লাগে। জানি না কখন নদী ভবনটা ভেঙে নিয়ে যায়! আমরা ভীতিহীন পরিবেশে পড়াশোনা করতে চাই।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রশিদা বানু বলেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে নদী ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান সরকার বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। সরেজমিন পরিদর্শনের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিতভাবে জানানো হবে, যাতে দ্রুত ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে খানসামার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় নলবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ষষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৪৫০ শিক্ষার্থী রয়েছে।