দীর্ঘ ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগর থেকে মাছ ধরে একের পর এক ট্রলার ফিরে আসছে পটুয়াখালীর মহিপুর ও আলীপুর মৎস্য বন্দরে। এর ফলে বন্দরের বাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত হয়ে উঠেছে চারপাশ। বহুদিনের নীরবতা ভেঙে প্রাণ ফিরে পেয়েছে শিববাড়িয়া নদীর তীরে অবস্থিত এই গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য বন্দর।
এদিকে জেলেরা জানিয়েছেন, আশানুরূপ মাছ ধরা পড়ায় তারা বেশ উচ্ছ্বসিত। অপরদিকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, সরবরাহ ভালো হলেও বাজারে ইলিশের চাহিদা অনেক বেশি থাকায় দাম কিছুটা চড়া।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহিপুর ও আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়ৎ ঘাটে ফিরেছে অসংখ্য ছোট-বড় মাছ ধরার ট্রলার। এসব ট্রলার থেকে শ্রমিকরা ঝুড়ি ভরে মাছ তুলছেন আড়তে। জেলে, আড়ৎদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের হাঁকডাকে জমজমাট হয়ে উঠেছে বাজার। ইলিশসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যাচ্ছে আড়তে।
বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২,০০০ থেকে ২,২০০ টাকা দরে। ৮০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১,৬০০ থেকে ১,৮০০ টাকা কেজিতে। ৫০০ গ্রামের ইলিশ মিলছে ১,০০০ থেকে ১,২০০ টাকা দরে। আর ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা প্রতি কেজি দরে।
স্থানীয় জেলেরা জানান, ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর এলাকা থেকে ডিঙ্গি নৌকা ও ছোট ট্রলার নিয়ে অনেকেই ফিরেছেন কাঙ্ক্ষিত মাছ নিয়ে। তবে গভীর সাগরে যাওয়া বড় ট্রলারগুলো এখনও বন্দরে ফেরেনি। এসব ট্রলার ফিরলে সরবরাহ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন আড়ৎদাররা।
জেলে আবুল কালাম বলেন, "সরকারের ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা মেনে আমরা সাগরে যাওয়া বন্ধ রেখেছিলাম। এবার জাল ফেলতেই বেশ কিছু ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ ধরা পড়েছে। এভাবে আরও মাছ পেলে পুরনো ধার-দেনা শোধ করতে পারবো।"
মহিপুর মৎস্য আড়ৎদার মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাজু আহমেদ রাজা জানান, "ভারতের সঙ্গে সমন্বয় রেখে এ বছর যে অবরোধ দেওয়া হয়েছে, তাতে সাগর অনেকটা নিরাপদ ছিল। আশা করছি, আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে।"
উল্লেখ্য, বঙ্গোপসাগরে মাছের প্রজনন ও টেকসই আহরণ নিশ্চিত করতে ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সরকার। এ সময়ে সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা, পরিবহন ও সংরক্ষণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। এর আগে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ছিল ৬৫ দিন।
বিডি প্রতিদিন/আশিক