ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় নওগাঁ-বদলগাছী আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রায় দুই কিলোমিটার কাজ বন্ধ রয়েছে। সড়কের পিচ ও ইটের খোয়া উঠে ছোট-বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। আহত হয় যাত্রী-পথচারী। বেড়েছে জনদুর্ভোগ।
নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁ সড়ক বিভাগের অধীন তিনটি আঞ্চলিক ও তিনটি জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পের আওতায় ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি সাত কিলোমিটার সড়কের কাজ শুরু হয়। যেখানে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮ কোটি ৩৮ লাখ ৫১ হাজার টাকা। মেয়াদ ছিল চলতি বছরের ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। কাজটি করছে ‘জামিল ইকবাল-মাহফুজ খান লিমিটেড জয়েন ভেঞ্চার’ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নওগাঁ-বদলগাছী আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে দুই মাস আগে। যেখানে সাত কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের কাজ এখনো বাকি। সদর উপজেলার ঠ্যাংভাঙা মোড়, পাহাড়পুর বাজার ও র্কীত্তিপুর বাজার অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় দুই কিলোমিটার। এ তিনটি জায়গায় সড়কে পিচ ও খোয়া উঠে ছোট-বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে জমে থাকে পানি। ভাঙা সড়কে মাঝে-মধ্যে ঘটছে দুর্ঘটনা। গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। পালশা গ্রামের ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, সড়কে খানাখন্দের কারণে ভ্যানের যন্ত্রাংশ বিশেষ করে বিয়ারিং নষ্ট এবং টায়ার কেটে যায়। মাহাবুব আলম নামে এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, মোটরসাইকেলের সামনে মেয়েকে বসিয়ে নিয়ে নওগাঁ শহরের দিকে যাচ্ছিলাম। র্কীত্তিপুর বাজারে মোটরসাইকেলের সামনের চাকা গর্তে পড়ে উল্টে যায়। এতে আমরা দুজনই জখম হই। র্কীত্তিপুর বাজারে সড়কের পাশে দোকানি হাসান আলী বলেন, সড়কের বেহাল দশা। সামান্য বৃষ্টিতে খানাখন্দে পানি জমে যায়। যানবাহন গর্তে পড়ে, দুর্ঘটনা ঘটে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার রিফাত হাসান বলেন, জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় সড়ক উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকসান হচ্ছে।
নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুল হক বলেন, জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় বন্ধ আছে সড়ক উন্নয়ন কাজ। ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহণের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে টাকা ছাড় করা হয়েছে। জেলা প্রশাস বিষয়টি দেখছে। অধিগ্রহণ শেষ হলেই সড়কের কাজ শুরু হবে। নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহেল রানা বলেন, জমি অধিগ্রহণে ঠ্যাংভাঙা মোড়ে ৮৫০টি আবেদনের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৫০টির শুনানি হয়েছে। চারটি চেক বিতরণ করা হয়েছে। ১২টি চেক প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ছাড়া পাহাড়পুর বাজার ও র্কীত্তিপুর বাজারে জমি অধিগ্রহণের আবেদন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে। এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ হতে পারে।