নানান সমস্যা নিয়ে চলছে কুমিল্লা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজ। এখানে নেই পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক। ছাত্রাবাসে দুজনের কক্ষে গাদাগাদি করে থাকছেন ৮-১০ জন। শ্রেণিকক্ষ স্বল্পতার কারণে পাঠাগার ও অডিটোরিয়ামে চলে পাঠদান। এতে বিঘ্ন ঘটছে লেখাপড়ার। দ্রুত সংকট উত্তরণ চান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী মৌমিতা রানী বলেন, আমরা এক রুমে আটজন থাকি। যদি এই রুমে চারজনও থাকতে পারতাম তাহলে পড়ালেখার মোটামুটি একটা পরিবেশ পেতাম। নতুন হোস্টেল নির্মাণ হলে দুর্ভোগ কমে যেত। মুসফেরা ফেরদৌস নামে আরেক ছাত্রী বলেন, দুজনের রুমে টেনেটুনে চারজন থাকা যায়। সেখানে ৮-১০ জন করে থাকতে হচ্ছে। একজন ফোনে কথা বললে বা কারও গেস্ট এলে লেখাপড়ায় মনোযোগ বিঘ্ন ঘটে। এক রুমে বেশি মানুষ থাকায় ঘুমেরও সমস্যা হচ্ছে। ছাত্র মো. নাহিদ বলেন, ছাত্রীদের তবু হোস্টেল আছে আমাদের তাও নেই। বাইরে থাকতে হচ্ছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসি। বাসাও পাই না। ব্যাচেলরদের কেউ বাসা ভাড়া দিতে চায় না। হোস্টেল না থাকায় লেখাপাড়ার সমস্যা হচ্ছে। ক্লাস রুমের সংকট রয়েছে। এক রুমে ৮০ জন ক্লাস করি, যেখানে ৪০ জন ভালোভাবে বসা যায়। হাউস কিপার শিবানী রানী ভৌমিক বলেন, ৩০টি রুমে ১২০ জন থাকা যায়। সেখানে ৩০০-এর বেশি শিক্ষার্থী থাকছে। নার্সিং ইন্সট্রাক্টর আউলিয়া খাতুন বলেন, আমাদের ল্যাবে জায়গা সংকট রয়েছে। শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে প্র্যাকটিস করতে পারছেন না। ল্যাবেও প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি নেই। অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম সরকার বলেন, ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠান কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯২ সালে এ ক্যাম্পাসে এসেছে। আমাদের হোস্টেল ও ক্লাস রুমের সংকট রয়েছে। চাহিদামতো শিক্ষক, অফিস স্টাফ ও ক্লিনার নেই। নতুন একাডেমিক ভবন ও হোস্টেল প্রয়োজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লা নগরী-সংলগ্ন কুচাতলী এলাকার মেডিকেল কলেজের পাশে কুমিল্লা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজের অবস্থান। এখানে বর্তমানে ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করেন। তাদের ৯০ ভাগ ছাত্রী ও ১০ ভাগ ছাত্র। ছাত্রীদের থাকার জন্য আবাসিক হোস্টেলে ৩০টি কক্ষ থাকলেও ছেলেদের কোনো ছাত্রাবাস নেই। ৩০টি কক্ষে ভালোভাবে ৬০ জন থাকতে পারেন। সেখানে ৩০০ জনের বেশি গাদাগাদি করে থাকছেন। ল্যাবের কক্ষ এতই ছোট শিক্ষার্থীদের দাঁড়ানোরও জায়গা নেই। পুরোনো ভবনের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে পড়ছে।
এমএলএস দিয়ে করানো হচ্ছে সিকিউরিটির কাজ। ক্লিনার প্রয়োজন ছয়জন, আছেন একজন। মালি নেই। ছয় বাবুর্চি দরকার, আছেন একজন। তাকে মাঝেমাধ্যে ছাত্রীরা সাহায্য করেন। চার অফিস সহকারীর স্থলে একজন কর্মরত। তিনিও কিছুদিনের মধ্যে অবসরে যাবেন। অবসরে যাচ্ছেন একমাত্র হাউস কিপারও। রাজস্ব ও ডেপুটেশনে মিলিয়ে ১৪ শিক্ষক আছেন। প্রয়োজন কমপক্ষে ২০ জন।