দীর্ঘদিন সংস্কার করা হয় না লালমনিরহাট জেলার বেশির ভাগ সড়ক। সড়কগুলোর পিচ-পাথর উঠে গিয়ে বেরিয়ে পড়েছে খোয়া-মাটি। অনেক স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জেলাবাসীকে। বর্ষা মৌসুমে সেই দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েক গুণ। জেলা এলজিইডি ও সড়ক বিভাগ বলছে, বরাদ্দ না থাকায় সংস্কার করা যাচ্ছে না।
জেলা শহরের ক্যান্টিন মোড় থেকে দুরাকুটি হয়ে একটি সড়ক চলে গেছে হাতিবান্ধা উপজেলায়। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাতিবান্ধা উপজেলাসহ তিনটি উপজেলা ও আশপাশের কয়েকটি এলাকার হাজারো মানুষ লালমনিরহাট শহরে যাতায়াত করে। কিন্তু দুরাকুটি থেকে হাতিবান্ধার দৈখাওয়া মোড় পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্ত, উঠে গেছে কার্পেটিং। হেলেদুলে চলছে যানবাহন। সড়কটির কালিস্থান এলাকায় অটোরিকশাচালক রিপন মিয়া আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। অসুস্থ রোগী নিয়ে এ সড়ক দিয়ে গেলে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রায় দিনই এ সড়কে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে।’ একই সড়কের কালভৈরব এলাকার শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে সড়কটি। এর গর্ত, ভাঙা স্থানগুলো দ্রুত মেরামত করা না হলে দুর্ঘটনায় প্রাণহানিও হতে পারে। বর্ষা শুরু হয়েছে, দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে।’
জেলার আদিতমারী উপজেলার নামুড়ি মোড়-শিয়ালখোওয়া সড়কের প্রায় ৮ কিলোমিটার অংশে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একই অবস্থা শিয়াল খোওয়া হাট-সোনারহাট ৬ কিলোমিটার সড়কেরও। এ সড়কে ডোবার মতো শতাধিক গর্ত রয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করলেও বর্ষায় খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। সড়কটির বান্দেরকুড়া এলাকায় মাসুদ রানা ভাঙা সড়ক দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্ষাকালে পানি জমে থাকায় গর্ত বোঝা যায় না। একেকটা গর্ত ১২ থেকে ১৫ ফুট দীর্ঘ। এলাকাবাসী কয়েকবার এ সড়ক মেরামতের জন্য উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিসে গিয়েছিল; কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। একই চিত্র, লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের কালিগঞ্জের ভুল্লারহাট থেকে হাতিবান্ধা পর্যন্ত। সেখানে রাস্তা মেরামতের নামে মাসের পর মাস মানুষকে দুর্ভোগে ফেলেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। রাস্তা খুঁড়ে রাখা হলেও কাজ করা হচ্ছে না।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) লালমনিরহাটের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান লাডলা বলেন, ‘রুটিন মেরামতের আওতায় সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার করতে হবে। অন্যথায় বর্ষায় চরম মূল্য দিতে হবে জেলাবাসীকে। লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী কাওসার জামান বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে কোনো বরাদ্দ না থাকায় সড়ক সংস্কারসহ উন্নয়ন কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। নতুন অর্থবছরে বরাদ্দ পেলে সড়কগুলো সংস্কার করা হবে।’