বর্ষা শুরু হওয়ায় চলতি মৌসুমে বন্ধ হয়ে গেছে লবণ উৎপাদন। তবে দাম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন চাষিরা। তারা বলছেন, প্রতি মণ লবণ উৎপাদনে খরচ ৩০০ টাকারও বেশি। প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ২৭০-২৮০ টাকায়।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) সূত্র জানায়, এ বছর লবণ উৎপাদনে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে ১৮ মে থেকে। চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদন হয়েছে ২২ লাখ ৫১ হাজার ৬৫১ মেট্রিক টন। যা ৬৪ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ লবণ উৎপাদন। এর আগে ২০২৩-২৪ মৌসুমে লবণ উৎপাদন হয় ২৪ লাখ ৩৭ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন।
বিসিক কক্সবাজারের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদন শুরু হয়েছিল গত বছরের ৪ নভেম্বর থেকে। ১৮ মে থেকে লবণ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। কক্সবাজার সদর, টেকনাফ, রামু, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী, ঈদগাঁও এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ৬৯ হাজার ১৯৮ একর জমিতে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৬ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। ১৭ মে পর্যন্ত মৌসুমের ৬ মাসে লবণ উৎপাদন হয়েছে ২২ লাখ ৫১ হাজার ৬৫১ মেট্রিক টন।
বিসিকের তথ্যমতে, উপকূলে চাষিদের কাছে মজুত আছে এ মৌসুমে উৎপাদন হওয়া ১৪ লাখ মেট্রিক টনের বেশি লবণ। প্রতি মণ লবণ বিক্রি হচ্ছে ২৭০-২৮০ টাকায়। এ ক্ষেত্রে প্রতি কেজির দাম পড়ে সাড়ে ৬ থেকে ৭ টাকা। যদিও বাজারে প্যাকেটজাত লবণের খুচরা মূল্য প্রতি কেজি ৩০-৪৫ টাকা।
বিসিক কক্সবাজার লবণশিল্প উন্নয়ন প্রকল্পের উপমহাব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল জানান, চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদন হয়েছে ২২ লাখ ৫১ হাজার ৬৫১ মেট্রিক টন। ঘাটতি থাকলেও লবণ আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই। মাঠপর্যায়ে চাষিদের হাতে ১৪ লাখ মেট্রিক টন লবণ অবিক্রিত অবস্থায় রয়েছে। যা দিয়ে আগামী ৭ থেকে ৮ মাস দেশের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। তার পর নভেম্বর কিংবা ডিসেম্বর থেকে ফের লবণ উৎপাদন শুরু হবে। মাঠপর্যায়ে লবণের দাম বাড়লে প্রান্তিক চাষিরা লাভবান হয়।
কুতুবদিয়ার লবণ চাষি করিম উদ্দিন জানান, প্রতি মণ লবণ উৎপাদন খরচ ৩০০ টাকারও বেশি। এখন প্রতি মণ বিক্রি করে পাওয়া যাচ্ছে ২৭০-২৮০ টাকা। লবণের ন্যূনতম একটা দাম নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত।
কক্সবাজার সদরের চৌদলদণ্ডী এলাকার লবণ চাষি মোহাম্মদ আলম বলেন, একবার বৃষ্টি হলে সাত থেকে নয় দিন লবণ উৎপাদন বন্ধ থাকে। এবার এপ্রিল মাসের শেষের দিকে এবং মে মাসে মাঝে মাঝে বৃষ্টিপাতের কারণে লবণ উৎপাদন বন্ধ ছিল। লবণ উৎপাদন নিয়ে হতাশা না থাকলেও দাম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।