তেহরানের বেহেশত-ই-জাহরা গোরস্থান। যেখানে বহু প্রজন্মের মানুষকে দাফন করা হয়েছে। শহরের একটি ঐতিহাসিক স্মৃতি হয়ে উঠেছে এই গোরস্থান। ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কবরস্থানটির নামকরণ করা হয়েছিল বেহেশত-ই-জাহরা।
১৯৭৯ সালে ইসলামী বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমেনি প্রথমবারের মতো এই স্থান থেকেই তার দেশে প্রত্যাবর্তনের পর ভাষণ দেন। সেই দিনটি ছিল অদ্ভুত এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
কিছুদিন আগে, বেহেশত-ই-জাহরার সেকশন ৪২-এ প্রায় ২৫০ জন শহীদ সমাহিত। এখানে দাফন করা শহীদ যাদের মধ্যে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষার্থী এবং এমনকি শিশু পর্যন্ত রয়েছেন। প্রতিটি কবর যেন একেকটি গল্প শোনাচ্ছে।
শহীদ কমান্ডার জাভাদের মায়ের চোখে জল। তিনি বলেন, আমি আল্লাহকে শুধু বলেছিলাম, এই আত্মত্যাগকে কবুল করুন। তার বোন জানান, হারিয়ে যাওয়া ভাইয়ের মরদেহ খুঁজে পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি।
বেহেশত-ই-জাহরা একটি স্থান যেখানে বিভিন্ন পেশার, ধর্মের, ও পরিচয়ের মানুষ একসঙ্গে সমাহিত। কবরের পাশে সবুজ ও লাল পতাকা উড়ছে।
একজন তরুণ বললেন, আমরা এখানে স্বেচ্ছায় এসেছি, শুরুতে চল্লিশ দিন থাকার কথা ছিল, এখন পঞ্চাশ দিন পার।
ইরান মনে করে এই কবরস্থান কেবল এক যুদ্ধের স্মৃতি নয় বরং তরুণ প্রজন্মের জন্য এক শিক্ষা। যেখানে তারা দেশের প্রতি ভালোবাসা, আত্মত্যাগ ও প্রতিরোধের মর্ম উপলব্ধি করে।
শহীদ হোসেনের বাবা বলেন, আমার ছেলে চেয়েছিল তার কবরপত্রে শুধু ‘শহীদ’ ও ‘নেতার সৈনিক’ লেখা থাকুক।
বেহেশত-ই-জাহরার সেকশন ৪২ শুধু কবরস্থান নয় বরং তরুণদের মঞ্চ, যেখানে তারা শহীদদের সঙ্গে কথা বলে, তাদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নেয় এবং নতুন প্রজন্মের জন্য দেশের প্রতি ভালোবাসা জাগ্রত হয়। এমনটাই ধারণা ইরানিদের।
সূত্র: তেহরান টাইমস
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল