সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জে বনের ভিতর সৃষ্টি হওয়া ২২টি বিলে জাল পেতে মিঠাপানির মাছ ধরার ক্ষেত্র তৈরি, পায়ে চলা পথ (ছিলা) করতেই জেলেরা শুষ্ক মৌসুমে পরিকল্পিতভাবে বনে আগুন লাগিয়ে থাকে। অবৈধ পথে মাছ ধরা নিয়ে লোকালয়ের এক শ্রেণির অসাধু জেলে ও বন কর্মকর্তাদের মধ্যে ঘুষবাণিজ্য ও অলিখিত সমঝোতা হয়। তার পরও চাহিদামতো টাকা দিতে না পেরে বিল থেকে মাছ শিকার বঞ্চিত হয়ে ক্ষুব্ধ জেলেরাও কখনো কখনো সুন্দরবনে আগুন লাগিয়ে থাকে। এভাবে ২২ বছরে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে ২৫ বার আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে প্রায় ১০০ একর বন। সর্বশেষ ২২ মার্চ বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজী টহল ফাঁড়ির টেপার বিল এলাকায় ও ২৪ মার্চ পার্শ্ববর্তী ধানসাগর টহল ফাঁড়ির শাপলার বিল এলাকায় আগুনে প্রায় আট একর বন পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তবে, বিল নেই এমন দু-একটি এলাকায়ও মৌয়ালদের মশাল ও বিড়ি-সিগারেটের নিক্ষিপ্ত অংশ থেকেও সুন্দরবনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। বন বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সুন্দরবন বিভাগ বলছে, চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জে লোকালয়ের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ভোলা নদী অপরিকল্পিত পুনর্খনন করা হয়। এ সময় মাটি বনের পাশে ফেলা ও পলি জমে খালের পাড় উঁচু হয়ে যাওয়ায় জোয়ারের পানি ওঠানামা করতে না পারায় বনের পূর্ব বিভাগের দুটি রেঞ্জে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় ২২টি মিঠাপানির বিল। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ম্যানগ্রোভ বনের বৈশিষ্ট্য হলো জোয়ারে বনভূমি প্লাবিত হয়। আর ভাটার সময় পানি নেমে যায়। অপরিকল্পিতভাবে ভোলা নদী পুনর্খনন করে বনে পানি ওঠানামার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভোলা নদীর অববাহিকায় বিল সৃষ্টি হয়েছে। খালের পাড়ে পলি জমে ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে কোথাও কোথাও বিলে পরিণত হয়েছে। এসব বিলের সফঙ্গ নদী ও সংযোগ করে দিতে নালা কেটে দেওয়া হলে জোয়ার-ভাটার পানি ওঠানামা করে পলি জমে প্রাকৃতিক নিয়মে বিল ভরাট হয়ে যায়। বন বিভাগ বছরের পর বছর ধরে এটা না করায় এখন আগুন সন্ত্রাসীদের হাতে পুড়ছে সুন্দরবন। এর আগে দুটি অগ্নিকাে র ঘটনায় দেখা গেছে বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কঠোর হওয়ায় সংশ্লিষ্ট স্টেশন কর্মকর্তা আগুন দস্যুদের চিহ্নিত করে মামলাও করেছে। এখন সময় এসেছে বিল থেকে বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা ও টাউট নেতাদের অবৈধ্য আয় বন্ধ করে সুন্দরবন রক্ষা করার। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, সুন্দরবনে সর্বশেষ টেপার বিল ও শাপলার বিল এলাকার বনে আগুন লাগার ঘটনায় তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনে বিলে মিঠাপানির মাছ ধরার স্থান পরিষ্কার করার জন্য জেলেরা বনে আগুন লাগিয়ে থাকে বলে উল্লেখ করেছে। তবে, এই দুই দফা আগুন কারা লাগিয়েছে তাদের চিহ্নিত করতে পারেনি তদন্ত কমিটি। এ ছাড়া সুন্দরবনে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী মৌয়ালদের মশাল ও বিড়ি-সিগারেটে থেকেও আগুল লাগতে পারে বলে উল্লেখ করেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে সুন্দরবনে আগুন প্রতিরোধে ভোলা নদী পুনর্খনন করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, সুন্দরবনের বলা কাঠ কাটার পাস পারমিট প্রদান, পাহারা জোরদার করার সুপারিশও করা হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে এ বনের আগুন লাগা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে, আশা প্রকাশ করেন এই বন কর্মকর্তা।
শিরোনাম
- ভারত থেকে পুশইন, পঞ্চগড়ে ১১ জন আটক
- তরুণদের টার্গেট করে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ শুরু
- মাদক ও দুর্নীতি কমানো গেলে দেশ এগিয়ে যাবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় বরিশালের যুবক নিহত
- ‘এই সরকারের একমাত্র ম্যান্ডেট স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করা’
- আওয়ামী স্টাইলে কোনো নির্বাচন হবে না: রফিকুল ইসলাম খান
- যুক্তরাষ্ট্রে ৩ মাস জেল খেটে ফিরেই বিমানবন্দরে আটক যুবলীগ নেতা
- আদালতের লাগাতার রুলিংয়ে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প
- অবশেষে জানা গেল ‘ধামাল ৪’ মুক্তির তারিখ
- ভাঙ্গায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ৪ নেতাকর্মী গ্রেফতার
- শপথ গ্রহণ নিয়ে যা বললেন ইশরাক
- ইউক্রেন-রাশিয়া শীর্ষ সম্মেলন যুদ্ধ অবসানে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’: এরদোগান
- বগুড়ায় মেয়েকে উত্যক্তের প্রতিবাদকারী মা-বাবা নিরাপত্তাহীনতায়
- আমি ছাড়াও সেই আইনজীবীর হাতে অনেকেই যৌন হেনস্থার শিকার: নিমরিত
- বগুড়ার আদমদীঘিতে নবাগত ইউএনওর সাথে মতবিনিময় সভা
- গাজায় গণহত্যা বন্ধে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর
- ইউটিউবের বিজ্ঞাপন এবার আরও বেশি মনোযোগ ও অভিজ্ঞতা নষ্ট করবে
- ২৩ বছর পর লিগ শিরোপার স্বাদ পেল মোহামেডান
- বগুড়ায় চোলাই মদসহ আটক ১
- কালিহাতীতে নারীর হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার
সুন্দরবনে আগুনের যত কারণ
শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর