বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের জন্য অর্ধশত আইন, নীতিমালা ও বিধিবিধান রয়েছে, যা বিশ্বের কোথাও নেই। এসব আইন সাংবাদিক ও স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। এ দেশে উল্লেখযোগ্য একটা সময় ক্ষমতাসীনদের কাছে দায়বদ্ধ ছিল গণমাধ্যম। কিন্তু শৃঙ্খলিত সংবাদপত্র মানে শৃঙ্খলিত সমাজ। তাই সাংবাদিকতাকে বাধাহীন করার জন্য সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন, অনলাইন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ সমন্বিত জাতীয় গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। গতকাল সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। যশোর প্রেস ক্লাবের শহীদ সাংবাদিক গোলাম মাজেদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শিক্ষাবিদ অধ্যাপক নার্গিস বেগম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন ও সহকারী মহাসচিব এহতেশামুল হক শাওন। সম্মানিত অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর যশোর জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল, প্রেস ক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন এবং দৈনিক লোকসমাজের প্রকাশক শান্তুনু ইসলাম সুমিত।
কাদের গণি চৌধুরী আরও বলেন, পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও সম্মানজনক পেশা। কিন্তু রাষ্ট্রের ক্ষমতায় যদি ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচার বা কর্তৃত্ববাদী সরকার থাকে, সমাজে পেশিশক্তির উত্থান ঘটে, সেখানে সাংবাদিকতা কঠিন হয়ে যায়। সমাজে বিবেকের দিশা হারিয়ে যায়, মানবিক মূল্যবোধ ভূলুণ্ঠিত হয়। তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময় দেশে সাংবাদিকতা বলে কিছু ছিল না। ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট সরকার পতন হলে সাংবাদিকদের অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। কেউ কেউ পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার হয়েছেন। অনেক সাংবাদিক পদপদবি হারিয়েছেন। এগুলো দুঃখজনক ও অস্বাভাবিক বিষয়। তবে তাদের লেজুড়বৃত্তি ও দালালি নিশ্চয়ই অযৌক্তিক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। গণমাধ্যমকে তারা গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার জায়গায় ধরে রাখতে পারেননি। সরকারকে তুষ্ট করতে গিয়ে তারা জন-আকাক্সক্ষাার কথা ভুলেই গিয়েছিলেন। এখানেই গণমাধ্যমকর্মীদের নৈতিক পরাজয় ঘটেছে।