দিন যত যাচ্ছে ততই সিলেট নগরজুড়ে গড়ে উঠেছে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যেন হাতের নাগালে থাকে স্বাস্থ্যসেবা। কিন্তু এই স্বাস্থ্যসেবার নামে আসলে গড়ে উঠছে প্রতারণার ফাঁদ। কারণ নগরীতে গড়ে ওঠা এসব চিকিৎসা কেন্দ্র ও রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের অনেকগুলোরই নেই বৈধতা। লাইসেন্স ছাড়াই কেউ কেউ দেদার চালিয়ে যাচ্ছে ব্যবসা। আর কেউ শর্ত মেনে লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও পরে নবায়ন না করায় হয়েছে অবৈধ। আবার বৈধ চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার। মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ও সিলগালা করা হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই ফের চালু হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানগুলো।
সম্প্রতি সিলেট জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট নগরীর লামাবাজার, মির্জাজাঙ্গাল ও স্টেডিয়াম মার্কেটের ৮টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায়। অভিযানে ৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬টির বৈধ কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় জনবল পাওয়া যায়নি। অভিযানকালে মির্জাজাঙ্গাল এলাকার আল-কাওসার হাসপাতালে কোনো চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা ও অদক্ষ চিকিৎসক দিয়ে রোগীদের অস্ত্রোপচার করারও প্রমাণ পায় প্রশাসন। এ ছাড়াও হাসপাতালটির লাইসেন্সও নবায়ন করা হয়নি। এমন অব্যবস্থাপনা দেখতে পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই এলাকার সেফওয়ে হাসপাতালও মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স দিয়ে পরিচালিত হচ্ছিল। এর আগে স্বাস্থ্য বিভাগ নোটিস দিলেও তা আমলে নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে অভিযানে হাসপাতালটি সিলগালা করে দুই দিনের মধ্যে লাইসেন্স নবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়। একইভাবে কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে ভয়াবহ অনিয়মের চিত্র দেখতে পান স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন। অদক্ষ লোক দিয়ে স্যাম্পল কালেকশন, অযোগ্য টেকনিশিয়ান দিয়ে রোগ নির্ণয় ও লাইসেন্স নবায়ন না করে ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনার সত্যতা পান প্রশাসন। সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান জানান, অবৈধ চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রগুলোর কোনো তালিকা তাদের কাছে নেই। তবে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়।