ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসককে চড় মারার অভিযোগে আরিফ হোসেন (১৮) নামে এক কিশোর মানসিক রোগীকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। এর জেরে চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মচারীরা ঘণ্টাব্যাপী নিউরোসার্জারি বিভাগের সেবা বন্ধ রাখেন। পরে তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। মানসিক সমস্যার কারণেই আরিফকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল তার পরিবার। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, একজন মানসিক রোগীর প্রতি চিকিৎসকের এমন আক্রোশ কাম্য নয়। ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী ইনচার্জ মাসুদ আলম জানান, জরুরি বিভাগের (রুম-৪) নিউরোসার্জারির চিকিৎসক ডা. মনিমুল আহমেদের গালে চড় মারে ওই যুবক। এরপর আনসার সদস্যরা তাকে আটক করে পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে আসে। পরে তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, ‘চিকিৎসককে চড় মারার অভিযোগে আরিফ আমাদের হেফাজতে আছে। প্রাথমিক কথাবার্তায় মনে হয়েছে সে মানসিকভাবে সুস্থ নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কাশিমপুর খিলমার্কেট এলাকার বাসিন্দা আরিফ। কয়েক মাস আগে তার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। সপ্তাহখানেক আগে ফতুল্লার শান্তিনগরে একজনের সঙ্গে সে অস্বাভাবিক আচরণ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ব্যাপক মারধর করেন ওই ব্যক্তি। তখন থেকে হাঁটতে পারছিল না আরিফ। নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা ভালো ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে বলেন। এজন্য আরিফকে নিয়ে গতকাল বিকালে ঢামেকের জরুরি বিভাগে আসে তার পরিবার।
আরিফের বাবা তাজউদ্দিন জানান, জরুরি বিভাগের ৪ নম্বর রুমে গেলে তারা কোথা থেকে এসেছেন চিকিৎসক জানতে চান। তখনই আরিফ হুট করে চিকিৎসকের গালে চড় মারে।
আরিফের মা শিল্পী বেগম জানান, ‘আরিফ ডাক্তারের গায়ে হাত তুলে অন্যায় করেছে। কিন্তু ডাক্তাররা এরপর আমার ছেলেকে হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে অনেক মারধর করেছে। আমরা ডাক্তারদের পা ধরে মাপ চেয়েছি, তার পরও মেরেছে। মানসিক সমস্যা বিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধ জানালেও তারা পুলিশে দিয়েছে।’