কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জে পৃথক ঘটনায় পুলিশ হেফাজতে দুই ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। প্রতিষ্ঠানটি এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আসক এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯ জুন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার এলাকা থেকে শেখ জুয়েল (৩৫) নামে একজন যুবককে মাদকবিরোধী অভিযানে আটক করে পুলিশ। আটক অবস্থায় থানা হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, জুয়েল পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েই মৃত্যুবরণ করেছেন। এর আগে ১৩ জুন রাতে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী পৌর এলাকা থেকে ফিরোজা বেগম (৫০) নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা না থাকা সত্ত্বেও তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন সকালে থানা হেফাজতেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনাকে পুলিশ ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ হিসেবে চিহ্নিত করলেও এখন পর্যন্ত থানা ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা হয়নি, যা পরিস্থিতির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে অপরিহার্য। এতে বলা হয়, উভয় ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ এসব অভিযোগকে আমলে না নিয়ে আগেভাগেই হেফাজতে মৃত্যুকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে দাবি করেছে। পুলিশ কর্তৃপক্ষের এ ধরনের বক্তব্য পরিবার কর্তৃক অভিযোগগুলোর প্রতি মৌলিক-নৈতিকতা ও নিরপেক্ষতার পরিপন্থি। তদন্ত চলাকালীন পুলিশের পক্ষ থেকে একতরফা ব্যাখ্যার মাধ্যমে কোনো অভিযোগ খারিজ করে দেওয়ার এখতিয়ার নেই। প্রতিটি অভিযোগ স্বাধীনভাবে যাচাই করে সত্য উদ্ঘাটনের দায়িত্ব রাষ্ট্রীয় সংস্থার ওপরই বর্তায়।
পুলিশ হেফাজতে নাগরিকের মৃত্যুর অভিযোগগুলো অত্যন্ত গুরুতর উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ দণ্ডবিধি এবং ‘নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩’-এর আওতায় স্পষ্টত তদন্তযোগ্য। এ ধরনের ঘটনায় একটি নিরপেক্ষ ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত অপরিহার্য, যাতে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিরপেক্ষভাবে খুঁজে বের করা যায় এবং দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা সম্ভব হয়।