ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেছেন, যুক্তরাজ্যের উচিত নৈতিকতার জায়গা থেকে বাংলাদেশকে সহায়তা করা, যাতে ‘চুরি হয়ে যাওয়া’ অর্থ ফেরত আনা যায়। তিনি জানান, স্টারমারের সঙ্গে তার এখনো সরাসরি যোগাযোগ হয়নি, তবে ড. ইউনূস বিশ্বাস করেন, শেষ পর্যন্ত স্টারমার এ ন্যায্য দাবিকে সমর্থন করবেন। শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামল সম্পর্কে ড. ইউনূস স্পষ্ট ভাষায় বলেন, এ সময়টা ছিল কিছু আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠজনদের জন্য ‘বড় ধরনের লুটপাটের’ সুযোগ। বর্তমান সরকারের হিসাবে, শেখ হাসিনার সময় প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে এবং এর বড় একটি অংশ গেছে যুক্তরাজ্যে। এ ছাড়া কানাডা, সিঙ্গাপুর, ক্যারিবীয় অঞ্চল ও মধ্যপ্রাচ্যও এ টাকার গন্তব্যস্থল হিসেবে চিহ্নিত। ড. ইউনূস বলেন, যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে কিছুটা সহায়তা করছে, বিশেষ করে পাচার হওয়া অর্থের অবস্থান নির্ণয়ে।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি ইতোমধ্যেই শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের মালিকানাধীন লন্ডনে কোটি পাউন্ডের দুটি বাড়ি জব্দ করেছে। একই প্রেক্ষাপটে উঠে আসে লেবার পার্টির প্রাক্তন মন্ত্রী এবং শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের নাম।
দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে তাকে পদত্যাগ করতে হয়। অভিযোগ রয়েছে, তিনি আওয়ামী লীগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের থেকে বাড়িসহ নানা ধরনের সুবিধা গ্রহণ করেছেন, যদিও তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের ঘনিষ্ঠ টিউলিপ সিদ্দিক ড. ইউনূসকে একটি চিঠি পাঠিয়ে দেখা করতে চেয়েছিলেন, যাতে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের ‘ভুল বোঝাবুঝি’ নিয়ে কথা বলা যায়। কিন্তু ড. ইউনূস সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এটা একটা আইনি বিষয়, ব্যক্তিগত কিছু নয়।
এ সফর সম্পর্কে ড. ইউনূস জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্য সফর ‘শুধু শুরু’ এবং তার সরকার আরও সফরের পরিকল্পনা করছে। তার প্রশাসন যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, আর্থিক সংস্থা, পুলিশ ও সব ধরনের গোয়েন্দা সংস্থাসহ ‘সব দিক থেকে’ সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছে।