চট্টগ্রামে শনিবার রাতে ১০ মিনিট বৃষ্টি হয়। এ অল্প সময়ের বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় জিইসি মোড়সহ আশপাশ এলাকা। মঙ্গলবার রাতেও বৃষ্টি হয় প্রায় ২০ মিনিট। এ বৃষ্টিতেও নগরের বহদ্দারহাট, জিইসি মোড়, ওয়াসা মোড়, খুলশীসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। বর্ষা মৌসুমের আগেই অল্প বৃষ্টিতে তলিয়ে যাচ্ছে নগরের নিম্নাঞ্চল।
ফলে এবার মৌসুমের আগের এক পশলা বৃষ্টি জলাবদ্ধতার ভয়ংকর বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করেন নগরবাসী। বর্ষা মৌসুম শুরুর আরও ২০ দিন বাকি। জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টিতে জিইসি মোড়, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, খুলশী, মেহেদীবাগ, বাকলিয়া, চকবাজার, হালিশহরসহ বিভিন্ন এলকায় পানি জমে যায়। হঠাৎ ভারী বর্ষণে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে। ঘরমুখো মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। বর্তমানে জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরের তিনটি সংস্থা প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার চার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তবে বর্জ্যরে কারণে প্রকল্পের আশানুরূপ সুফল মিলছে না বলে জানা যায়।
‘পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম’-এর সদস্য অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে জলাবদ্ধতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। সেখানে সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, নগরের খাল-নালা দখল-ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ, খালের সংখ্যা কমে ৭২ থেকে ৩৬-এ আসা, শহরের উন্মুক্ত জলাধার ভরাট করে ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান খালের ওপর সেবা সংস্থাগুলোর পাইপ থেকে যাওয়া, সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকাসহ ১৩ কারণ চিহ্নিত করা হয়। এসব সমস্যা নিরসনে স্বল্প-মধ্য-দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার কথাও বলা হয়েছে।’ জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘মঙ্গলবারের বৃষ্টিতে নগরের কিছু নিচু এলাকায় পানি জমেছে। এখন প্রশ্ন হলো পানি কতক্ষণ জমে ছিল। পানি দ্রুত নেমে গেছে কি না।
আমাদের পর্যবেক্ষণ হলো পানি বেশি সময় থাকেনি। তবে পানি আরও দ্রুত সময়ের মধ্যে নেমে যাবে, যদি নালা-নর্দমা ও ড্রেনগুলো পরিষ্কার রাখা হয়। সড়কের পাশের ড্রেন-নালাগুলো বর্জ্যে ভরে থাকলে পানি কী করে দ্রুত নামবে! তাই যে কোনো মূল্যে নালা-নর্দমা পরিষ্কার রাখা, পলিথিনসহ অপচনশীল বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে। বর্জ্য ফেলা বন্ধ হলেই প্রকল্পের আশানুরূপ সুফল মিলবে। এমনটি হলে আগামী বর্ষা মৌসুমেও এ প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাবে।’