বাংলাদেশের টেকনাফ সীমান্তে মাদক পাচারে সরাসরি জড়িত মিয়ানমারের আরাকান আর্মি। তারা রোহিঙ্গা এবং এদেশীয় সিন্ডিকেটগুলোকেও মাদক পাচারে সহযোগিতা করছে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়নে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য তুলে ধরেন রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ।
কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, বেশিরভাগ মাদক আসছে নাফনদী ও সমুদ্র উপকূলের দুটি পথ দিয়ে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য যাচ্ছে, আর মিয়ানমার থেকে আসছে ইয়াবা, আইসসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ও অবৈধ অস্ত্র। নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে মাদক প্রতিরোধ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ব্রিফিংয়ে কর্নেল মহিউদ্দিন বলেন, এ পর্যন্ত ২২৮ জন জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি, যাদের মধ্যে বিজিবির প্রচেষ্টায় ১২৪ জনকে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। ১২ টি নৌকাসহ প্রেরত আসার অপেক্ষায় রয়েছে ১০৪ জন। আটক জেলেদের মধ্যে ৯৫ জন বাংলাদেশী ও রোহিঙ্গা ১৩৩ জন।
তিনি আরও জানান, সীমান্তের ওপারে জান্তা সরকারের পর থেকে আরাকান আর্মিও বিভিন্ন স্থানে স্থল মাইন পুঁতে রেখেছে। জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ২৩টি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
আরাকান আর্মি বৈধ কর্তৃপক্ষ না হওয়ায় তাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা সম্ভব নয়। নন-অফিসিয়াল যোগাযোগের মাধ্যমেই জেলেদের ফেরত আনা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে কর্নেল মহিউদ্দিন বলেন, মাদক নির্মূলে বিজিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে মাদকের স্থায়ী নির্মূলে সামাজিক প্রতিরোধের বিকল্প নেই।
তিনি জানান, গত ১৫ জুলাই থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে ঝুঁকিপূর্ণ ১৪৭ টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব অভিযানে ২৮ লাখ পিস ইয়াবা, ৮১৬ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ৩৬৫ লিটার বাংলা মদসহ বিভিন্ন মাদক উদ্ধার করেছে। এ সময় ১৮৮ জন আসামিকে আটক করা হয়। একই সময়ে চোরাচালান হয়ে আসা ২২৬টি বার্মিজ গরুসহ বিভিন্ন চোরাইপণ্য আটক করেছে বিজিবি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল