এখনো নিয়োগ পাননি দলীয় বিবেচনায় নিয়োগের অজুহাতে চাকরিচ্যুত ৭৫৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা। ২০০৭ সালে তাদের নিয়োগ বাতিল করে তৎকালীন সরকার। এর মধ্যে ৫৩৬ জন এসআই ও ২২১ জন সার্জেন্ট। তবে প্রায় ১৭ বছর পর নিয়োগ বাতিলের আদেশ প্রত্যাহার ও চাকরিতে যোগদানের আবেদন করেছেন ৩৩০ জন। আবেদন যাচাই-বাছাই করে পুলিশ সদর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয় সুপারিশ করে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে বিবেচনার জন্য পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে গত মে মাসে সুপারিশের ফাইলটি পাঠানো হলেও অজ্ঞাত কারণে তা আটকে আছে। এ বিষয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ডা. বাহারুল আলম এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ওই ফাইলটি আমাদের কাছে নেই এবং এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।’ নিয়োগবঞ্চিত জাহাঙ্গীর আলম জানান, ২০০৬ সালে ক্যাডেট এসআইয়ে (নিরস্ত্র) ২৫০টি পদের বিপরীতে ৫৩৬ জনকে এবং পুলিশ সার্জেন্ট পদে ১১৮টি পদের বিপরীতে ২২১ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হয়। প্রার্থীদের লিখিত, মৌখিক ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর পুলিশ ভেরিফেকেশন চলমান থাকা অবস্থায় এসবি একটি রিপোর্ট দেয়। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে তৎকালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদ নিয়োগ বাতিলের নোটিস অনুমোদন করে এ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেন।
জানা যায়, চাকরি ফিরে পেতে হাই কোর্টে রিট করা হলে সে সময় হাই কোর্ট একযোগে ১৯টি রিট ডিসচার্জ করে দেন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নানাভাবে চেষ্টা করেও চাকরি ফেরত পাননি নিয়োগবঞ্চিতরা। উল্টো হয়রানির শিকার হয়েছেন অনেকে। আরেক নিয়োগবঞ্চিত সুজন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা গত বছরের নভেম্বরে নিয়োগ বাতিলের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করি। সেই আবেদন বিবেচনায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ যাচাই-বাছাই করে বিস্তারিত মতামতের জন্য পাঠায় পুলিশ সদর দপ্তরে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মতামত দেয় পুলিশ সদর দপ্তর। মেডিকেল বোর্ডের সনদ নেওয়া এবং এসআই বা সার্জেন্ট পদে বয়স ও বিবাহের শর্ত শিথিলের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারাধীন বলে জানায়। এরপর জানুয়ারিতে বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত সচিবকে (পুলিশ ও এনটিএমসি) আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয় জননিরাপত্তা বিভাগ। জানা যায়, ছয় সদস্যের কমিটি তিনটি সুপারিশ করে। এর মধ্যে বিশেষ ব্যাচ বিবেচনা করে আবেদনের সমান সংখ্যক পদ অ্যাডহক ভিত্তিতে সৃষ্টি করা এবং তাদের ট্রেনিং ও মেডিকেল বোর্ডে সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার শর্তে মতামত দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।