মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে জনপ্রিয় হচ্ছে বস্তায় আদা চাষ। খরচ কম, পরিশ্রমও কম কিন্তু লাভারে পরিমান বেশী তাই দিনে দিনে এ উপজেলার কৃষকরা বস্তায় আদা চাষের দিকে ঝুকছেন। চলতি বছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৫ হাজার বস্তায় আদা চাষ করা হয়েছে। এর মধ্য স্থানীয় কৃষি অফিস কৃষকদের ৭ হাজার ৫ শত বস্তা প্রদর্শনী প্লট দিয়েছে। বাকি ৭ হাজার ৫ শত বস্তা কৃষকরা নিজ উদ্যোগে করেছেন।
গত বছর আদা চাষ করা হয়েছিল ১২ হাজার বস্তা। আর ২০২৩ সালে প্রথম বছর ছিল ৬ হাজার বস্তা। চলতি বছর বস্তা থেকে ১২ হাজার কেজি আদা উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। যার বাজার মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা।
প্রদর্শনী প্লটে কৃষকদের উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্য বস্তা, বীজ, সার ও কীটনাশক দেয়া হয়েছে। আর নিজ উদ্দ্যেগে করা কৃষকদের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা সার্বিক দিকনিদের্শনা দিচ্ছেন। উপজেলার কালাপুর, মাজদিহি, টিকরিয়া, সুনগইড়, রামনগর, পরেরটং, মোহাজেরাবাদ, দিলবরনগর, খলিলপুর, লাহারপুর, বনগাত্তঁ, চিড়িগাত্তঁ, গন্ধবপুর, রাজপাড়া, পাত্রিকুল ও ডলুছড়া গ্রামে কৃষকরা বস্তা আদা চাষ করছেন।
স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, এপ্রিল-মে মাসে বস্তায় আদা রোপন করতে হয়। রোপনের ১৫-২০ দিন আগে মাটি প্রস্তুত করতে হয়। সাথে গ্যাস মুক্ত গোবর, ভার্মি কম্পোস্ট, ছাই, সার, কীটনাশক দিতে হয়। আদার ভালো ফলন পেতে হলে রোপণের ৫০ দিন, ৮০ দিন ও ১১০ দিন বয়সে প্রতি বস্তায় পরিমান মতো পটাশ ও ইউরিয়া সার মাটির সাথে মিশিয়ে গাছের গোড়া প্রয়োগ করতে হবে। গাছে স্প্রে করতে হবে ছত্রাকনাশক। জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে বস্তা থেকে আদা উঠাতে হয়। জাত ভেদে এক বস্তায় ফলন হয় প্রায় ১ কেজী আদা। আর প্রতি বস্তায় খরচ হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। প্রতি কেজী আদার বাজার মূল্য ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।
কৃষক মুক্তার হোসেন জানান, এ বছর ৫০০ বস্তায় আদা চাষ করেছি। আশাকরি ভালো ফলন হবে। গত বছর ১ হাজার ২০০ বস্তা চাষ করে ৭০০ কেজি আদা পেয়েছি। উৎপাদিত আদা থেকে কৃষি অফিস বীজ সংগ্রহের জন্য ১৫০ টাকা কেজি দরে ৩০০ কেজি আদা কিনে নেয়। বাকি আদা বাজারে বিক্রি করে ভালো লাভ হয়েছিল।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুকুর রহমান জানান, বাণিজ্যিকভাবে আদা চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। আমরা চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শসহ নানাভাবে সহযোগিতা করছি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন জানান, ‘বস্তায় আদা চাষ একটি লাভজনক। পতিত জমি, বাড়ির ছাদ বা উঠান ব্যবহার করা যায়। এই পদ্ধতিতে কম খরচে ভালো ফলন পাওয়া যায়। রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম হয়। শ্রীমঙ্গলে বস্তায় আদা চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে। আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল