বিশ্ব ফুটবলে লেখা হলো এক অভূতপূর্ব ইতিহাস। আটলান্টিক মহাসাগরের ছোট্ট এক দ্বীপদেশ, আয়তনে মাত্র ৪ হাজার বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা ৬ লাখের কম। সেই কেপ ভার্দ জায়গা করে নিল বিশ্বকাপে।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আফ্রিকার অন্যতম শক্তিশালী দল ক্যামেরুনকে পেছনে ফেলে প্রথমবারের মতো বিশ্বমঞ্চে পা রাখল ‘ব্লু শার্কস’ নামে পরিচিত এই দল।
আফ্রিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে সবচেয়ে বেশি ৮ বার বিশ্বকাপ খেলা ক্যামেরুন ছিল কেপ ভার্দের গ্রুপে। তবে শুরু থেকেই চমক দেখাতে থাকা কেপ ভার্দ গত মাসে ক্যামেরুনকে হারিয়ে দেয় বিশ্বকাপে ওঠার বার্তা। বুধবার লিবিয়ার সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করলেও পরের ম্যাচটি ছিল ঘরের মাঠে। সেই সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগিয়েই ফুটবল ইতিহাসে নিজেদের নাম লেখায় তারা।
ঐতিহাসিক দিনে উচ্ছ্বাসে ভাসে পুরো দেশ। এসওয়াতিনির বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ে বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত হতেই সোমবার দেশজুড়ে ঘোষণা করা হয় সাধারণ ছুটি। মাত্র ১৫ হাজার ধারণক্ষমতার জাতীয় স্টেডিয়ামে সমর্থকদের বাঁধভাঙা উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে দ্বীপ থেকে দ্বীপে।

প্রথমার্ধে গোলশূন্য থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধেই ব্যবধান গড়ে দেয় কেপ ভার্দ। ৪৮তম মিনিটে গোল করেন দালিয়ন লিভ্রামেন্তো, এরপর ৫৪ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান উইলি সেমেদো। আর শেষ সময়ে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার স্টোপিরা গোল করে জয়কে পূর্ণতা দেন।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১০ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কেপ ভার্দ। সমান ম্যাচে ক্যামেরুনের পয়েন্ট ১৯।
বিশ্বকাপ নিশ্চিত করা কেপ ভার্দ এখন আফ্রিকা অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপে খেলা ষষ্ঠ দল। এর আগে কোয়ালিফাই করেছে মরক্কো, তিউনিসিয়া, মিশর, আলজেরিয়া ও ঘানা।
জনসংখ্যার দিক থেকে কেপ ভার্দ হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপে খেলা দ্বিতীয় সবচেয়ে ছোট দেশ। ২০১৮ বিশ্বকাপে খেলা আইসল্যান্ডই একমাত্র দেশ, যাদের জনসংখ্যা ছিল আরও কম।
এই সাফল্যের পেছনে অন্যতম বড় ভূমিকা রাখছে দেশের বাইরে খেলতে থাকা কেপ ভার্দ বংশোদ্ভূত ফুটবলারদের জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করা। বিশ্বকাপ স্কোয়াডের অন্তত ৬ জনের জন্ম নেদারল্যান্ডসে। এছাড়াও রয়েছে পর্তুগাল, ইতালি, ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ডে জন্ম নেওয়া খেলোয়াড়। দলের অধিকাংশই ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলে অভ্যস্ত।
২০০২ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রথম অংশ নেওয়া কেপ ভার্দ ২০১৩ সালে প্রথমবার খেলেছিল আফ্রিকান নেশন্স কাপ। আর সেই আসরেই উঠে গিয়েছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। সবশেষ ২০২৩ আসরেও খেলেছে শেষ আটে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা