আগের ম্যাচে ২১৪ রান করেও জিততে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ, টিম ডেভিডের সেঞ্চুরিতে সিরিজটাও হাতছাড়া হয়। এবার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের তাণ্ডবে আবারো দুইশরও বেশি রান করে হারল ক্যারিবীয়রা। চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
রবিবার (২৭ জুলাই) সেন্ট কিটসে সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া ২০৬ রানের লক্ষ্যে ৩ উইকেট ও ৪ বল বাকি থাকতে পার করে ফেলে মিচেল মার্শের দল। এ নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে সপ্তমবার ২০০ বা এর বেশি রান তুলেও হারল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, এমন বিব্রতকর রেকর্ড আর কোনও দলের নেই।
দুর্দান্ত দুটি ক্যাচ নেওয়ার পর ওপেনিংয়ে ছয় ছক্কায় ১৮ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলে আজকের ম্যাচের সেরা হন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার ৪৭তম ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি এটি। কাইরন পোলার্ডকে ছাড়িয়ে তিনি এককভাবে এখন আছেন তালিকার দুইয়ে। সবার ওপরে ক্রিস গেইল (৬০ বার)।
ওয়ার্নার পার্কে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ আভাস দিয়েছিল উড়ন্ত শুরুর। তবে আগের ম্যাচের মতো বড় হয়নি শুরুর জুটি। প্রথম দুই ওভারে তিনটি চার একটি ছক্কা মেরে আউট হয়ে যান ব্র্যান্ডন কিং (১০ বলে ১৮)। কিংকে ফেরানোর পর আগের দিনের সেঞ্চুরিয়ান শেই হোপকেও (১০) ফেরান সিরিজে প্রথম খেলতে নামা জেভিয়ার বার্টলেট। রোস্টন চেইসকে ‘গোল্ডেন ডাক’ উপহার দেন সিরিজে প্রথম নামা আরেক ক্রিকেটার অ্যারন হার্ডি।
দ্রুত তিন উইকেট হারালেও আগ্রাসনের পথ ধরেই ছুটতে থাকে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা। কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেননি, গড়ে ওঠেনি কোনো অর্ধশত রানের জুটি। তবে রানের গতি কমেনি। ৫ বলে ৩১ করেন রাদারফোর্ড, দুটি করে চার-ছক্কায় ২২ বলে ২৮ রভম্যান পাওয়েল। দুই ছক্কায় ৬ বলে ১৬ করে আউট হয়ে যান শিমরন হেটমায়ার, রোমারিও শেফার্ড করে ১৮ বলে ২৮, জেসন হোল্ডার ১৬ বলে ২৬। এমনকি ৯ নম্বরে নামা ম্যাথু ফোর্ড দুই ছক্কায় করেন ৭ বলে ১৫, ১০ নম্বরে নেমে আকিল হোসেন ১০ বলে ১৬। তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান দুইশ ছাড়িয়ে যায়। তবে বড় ইনিংস বা বড় জুটি না হওয়াতেই আরও বড় হয়নি দলের স্কোর।
রান তাড়ার শুরুতেই বড় ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই জেডিয়ায় ব্লেডসের শিকার হন অধিনায়ক মিচেল মার্শ (০)। ৎবে তিনে নেমেই প্রবল পাল্টা আক্রমণ চালান জশ ইংলিস। ব্লেডসের ওভারে তিনটি চার মারেন তিনি, রোমারিও শেফার্ডকে টানা চারটি, ম্যাথু ফোর্ডকে ছক্কা ও চার। ষষ্ঠ ওভারে তার ফিফটি হয়ে যায় ২৮ বলে। ম্যাক্সওয়ে তখনও মাত্র দর্শক, তার রান ৪ বলে ২! পাওয়ার প্লের শেষ বলে জেসন হোল্ডারকে ছক্কা মেরে ম্যাক্সওয়েল জেগে ওঠেন। ইংলিস বিদায় দেন ফিফটি পেরিয়েই। জুটি থামে ৩৫ বলে ৬৬ রানে। তবে ম্যাক্সওয়েলের ঝড় চলতে থাকে। সঙ্গে যোগ দেন ক্যামেরন গ্রিনও। এই জুটিতে ৬৩ রান আসে স্রেফ চার ওভারেই।
ছক্কা দিয়ে ফিফটির চেষ্টায় ম্যাক্সওয়েলের ইনিংস থামে একাদশ ওভারে। পরে মিচেল ওয়েন (২) ও কুপার কনোলি (০) কাটা পড়েন ব্লেডসের এক ওভারেই। পাঁচ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু গ্রিন আর হার্ডি মিলে ২৮ বলে ৫১ রানের জুটি গড়ে দলকে নিয়ে যান জয়ের কাছে। হার্ডি ফেরেন ১৬ বলে ২৩ রান করে। জয়ের কাছাকাছি গিয়ে আউট হন জেভিয়ার বার্টলেট। তবে দলের জয় সঙ্গে নিয়েই ফেরেন গ্রিন। সিরিজের শেষ ম্যাচ সেন্ট কিটসেই, মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ২০৫/৯ (কিং ১৮, হোপ ১০, চেইস ০, রাদারফোর্ড ৩১, পাওয়েল ২৮, হেটমায়ার ১৬, শেফার্ড ২৮, হোল্ডার ২৬, ফোর্ড ১৫, আকিল ১৬*, ব্লেডস ৩*; হার্ডি ৪-০-২৪-২, বার্টলেট ৪-০-৩৯-২, অ্যাবট ৪-০-৬১-২, জ্যাম্পা ৪-০-৫৪-৩, এলিস ৪-০-২১-০)।
অস্ট্রেলিয়া: ১৯.২ ওভারে ২০৬/৭ (মার্শ ০, ম্যাক্সওয়েল ৪৭, ইংলিস ৫১, গ্রিন ৫৫*, ওয়েন ২, কনোলি ০, হার্ডি ২৩, বার্টলেট ৯, অ্যাবট ১; ব্লেডস ৪-০-২৯-৩, হোল্ডার ৪-০-৩৮-১, শেফার্ড ৪-০-৫৯-১, ফোর্ড ৪-০-৪৩-০, আকিল ৩.২-০-৩৬-১)।
ফল: অস্ট্রেলিয়া উইকেটে ৩ জয়ী।
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ: গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ